ভিডিও শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

খুন খারাবি বেড়েই চলেছে

খুন খারাবি বেড়েই চলেছে, প্রতীকী ছবি

পত্রিকাগুলো ক্রমেই যেন খুন-খারাবির বিবরণী হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কেবল গতকালের পত্রিকায় থাকা কয়েকটি খবরের শিরোনাম হলো, চট্টগ্রামে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা, মায়ের গলায় ধরলেন ছুরি, গাজীপুরে সাবেক স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, হবিগঞ্জে বিয়ের মেহেদি রঙ না মুছতেই যুবক খুন, লক্ষ্মীপুরে পুকুরে গোসল করতে নিষেধ করায় যুবক খুন, সাভারে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে বাসযাত্রী নিহত, বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট থেকে অটোচালকের লাশ উদ্ধার, বদরগঞ্জে ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, শ্রীপুরে বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই, সাভারে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে বাসযাত্রী, সুনামগঞ্জে বাসা থেকে মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার, চট্টগ্রামে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার পর মাকে কুপিয়ে আহত এমনই সব ঘটনা।

মাত্র দুটি পত্রিকার শিরোনাম এখানে উল্লেখ করা হলো। তাহলে বুঝে নিতে হবে অন্যান্য পত্রিকায় এমন ঘটনা আরো রয়েছে। আর এসব খবর পড়তে পড়তে চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আরও পড়তে ইচ্ছা হয় না। পত্রিকাতো ছাপবেই। পত্রিকা তো সমাজেরই দর্পণ। বিগত দেড় দশকে সামাজিক অবক্ষয় তথা খুন, ধর্ষণ, বিষয় সম্পত্তির বিরোধে খুন, প্রভাব-প্রতিপত্তি বা আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় খুন, সামান্য কথা কাটাকাটিতে খুন- দেশ যেন ক্রমেই খুনের উপত্যকায় পরিণত করা হয়।

বিগত সরকারের কর্মকর্তারা যারা এখনও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত তারা বাস্তবতা অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু নিচের তলার বাসিন্দা হিসেবে আমাদের পক্ষে চোখ বন্ধ করে থাকার উপায় নেই। দেখতে না চাইলেও তাতে কোনো লাভ হয় না। কারণ অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকে না। দেশের আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে- এটা বাস্তব সত্য। তবে এর একটা প্রকৃত কারণ হলো দেশে পুলিশি ব্যবস্থা এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। অনেক পুলিশই এখনও কাজে যোগ দেননি।

তারা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসাবে ভয়ে আত্মগোপন আছেন। ফলে রাষ্ট্রের পুলিশি ব্যবস্থা পূর্ণমাত্রায় কাজ শুরু করতে পারেনি এখনও। তবে এ অবস্থা কেটে যাবে শিগগিরই। থানাগুলো সক্রিয় হচ্ছে এবং পুলিশি তৎপরতা বাড়ছে। অপরাধীরা এতদিন রাজনীতির আশ্রয়ে কিংবা অর্থের জোরে পার পেয়ে গেছে। বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতাও এর জন্য দায়ী।

খুনের আসামি জামিনে বেরিয়ে এসে সাক্ষীদের খুন করে, না হয় ভয়ভীতি দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়। বিগতকালে দেখা গেছে রাজনৈতিক চাপে ন্যায় বিচারে অভাব ঘটেছে। এ ছাড়া বিচারের দীর্ঘসূত্রতাও অপরাধকে উৎসাহিত করে। অপরাধীদের ঘৃণার বদলে আমরা সাদরে বরণ করে নিই। নেতার আসনে বসিয়ে গলায় মালা দিই।

আরও পড়ুন

এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই এই সমাজের বসবাসযোগ্যতা বিনষ্ট হবে। দেশ অপরাধীদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হবে। অপরাধীদের দমনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা কোনো রকম ছাড় দেবে না-জনগণ এটাই দেখতে চায়।

ধর্ষণ, খুনোখুনি ও অজ্ঞাত পরিচয় লাশ উদ্ধারের ঘটনা অব্যাহত থাকায় মানুষ উদ্বিগ্ন। দেশে এসব অপরাধ না কমলে অন্যান্য অপরাধের মাত্রাও বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। যে কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি জনগণকেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবার প্রচেষ্টা ছাড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ব্যাহত হবে।

আমরা আশা করি, পরিস্থিতি আরো নাজুক হওয়ার আগেই সরকার কঠোর হাতে অপরাধীদের দমন করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হলেই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে পদবঞ্চিতদের স্মারকলিপি

সন্ত্রাসী ‘কিলার লিটন’ গ্রেফতার

তিন বছর পর ছয় মাস মেয়াদি আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত

কসবায় ডেকে নিয়ে অটোচালককে হত্যা, ১০ দিন পর লাশ উদ্ধার

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হৃদয়ের চিকিৎসা হচ্ছে না টাকার অভাবে

বগুড়ার শিবগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল মজিদ গ্রেফতার