‘গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি একটি ছদ্ম-যুদ্ধ চালাচ্ছে’

গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি একটি ছদ্ম-যুদ্ধ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
সোমবার (১০ মার্চ) দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফাইড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মাহফুজ আলম তার পোস্টে লেখেন, “গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি একটি ছদ্ম-যুদ্ধ চালাচ্ছে- গতকাল (রবিবার) প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একটি পর্যালোচনা সভায় নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও সহিংসতা নিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আমরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। গতকাল থেকে আজ (সোমবার) পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার চলমান এবং বিচারের কাজ দ্রুত ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে ও সরকার তৎপর।
ছাত্র-যুবকদের জন্য লক্ষাধিক চাকরির ব্যবস্থা ও তরুণদের জন্য জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণের বিষয় ও গতকালের আলোচনায় উত্থাপিত হয়েছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে দৃশ্যমান পদেক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং সে লক্ষ্যে সমন্বিত তৎপরতা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।”
মাহফুজ তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচার, প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করা, জুলাই শহিদ ও আহতদের জন্য ইতিবাচক উদ্যোগগ্রহণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার সক্রিয় ও সফল। কিন্তু সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী শ্রেণি ও মিডিয়ার মধ্যকার গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর বিরোধ, স্বার্থান্বেষা ও মতান্ধতা, অন্যদিকে গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তির ঐক্যবদ্ধ হয়ে ক্রমশ উত্থান সরকারকে বেকায়দায় ফেলছে।
আরও পড়ুনসরকার যুদ্ধ লড়ছে গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত একটি শক্তিশালী দেশি-বিদেশী জোটের বিরুদ্ধে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের মধ্যকার অভ্যুত্থানের ঐক্যকে নস্যাত করতে ওঠে পড়ে লেগেছে। সফল ও হচ্ছে। সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল ও অভ্যুত্থানের বিভিন্ন শক্তিকে মুখোমুখী না করাই আমাদের জন্য আখেরে ভালো হবে।”তিনি আরও বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশে এখন যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং সে যুদ্ধ অন্য জায়গা থেকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটা কন্ট্রোল রুম থেকে সে যুদ্ধের প্রতি সপ্তাহ ও দিনের কর্মসূচি চালু করা হয় ও মনিটর করা হয়। আমাদের সে যুদ্ধের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়তে হবে।
রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যা ও লুটপাটের বিচার, প্রতিষ্ঠানসমূহের পুনরুজ্জীবন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরসহ নানা বিষয় আমাদের লক্ষ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এ সরকারের আমলে এ দেশকে গড়ে তোলার সুযোগ ও সক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলেই ভিনদেশ থেকে দ্রুততার সঙ্গে সরকার পরিবর্তনের প্রেস্ক্রিপশন আসছে। কিন্তু নির্বাচন যথাসময়েই হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতে এ দেশে নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্র সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটবে এবং খুনী, ধর্ষক ও লুটেরাদের বিচার হবে।”
মন্তব্য করুন