নতুন দল নিবন্ধনের কাজ চলতি মাসেই শেষ করতে চায় ইসি

চলতি সেপ্টেম্বরেই নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজ শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ ২২টি দলের মাঠ পর্যায়ের তদন্তকাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছে তারা। বেশির ভাগ জেলা থেকে তদন্ত প্রতিবেদন এরই মধ্যে ইসি সচিবালয়ে এসেছে। এসব প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানাবে সাংবিধানিক এই সংস্থা।
এদিকে, প্রাথমিক বাছাইয়ে নিবন্ধন অযোগ্য ১২১ দলকে বাদ পড়ার কারণ তুলে ধরে চিঠি দিয়েছে ইসি। এতে অনেক দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। কেউ কেউ প্রতিকার চেয়ে আদালতে যাওয়ার কথা বলছে। এবার নতুন দল নিবন্ধন কার্যক্রমে আগ্রহী ১৪৩টি দল আবেদন করে।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে রাজনৈতিক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি থাকতে হয়। প্রতিটি উপজেলা কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণও থাকতে হয়।প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া ২২ দলের মধ্যে রয়েছে ফরওয়ার্ড পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)–সিপিবি (এম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ–শাজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সল্যুশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিককে জানান, ইসি ২২টি দলের বিষয়ে জেলাভিত্তিক তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছিল। এর মধ্যে কিছু প্রতিবেদন এসেছে।
বাদ পড়া দলগুলোর ক্ষোভ
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়া ১২১টি দলকে তাদের নিবন্ধন আবেদন ‘নামঞ্জুর’ করার বিষয়টি নিষ্পত্তি করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইসি বলছে, আগে দলগুলোকে বাদ পড়ার কারণ সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হতো না। ফলে অনেকে আদালতে গিয়ে নিবন্ধন নিয়ে আসার সুযোগ পেয়ে যেত।
নিবন্ধন আবেদন বাছাইয়ে ঝরে পড়া দল বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টির (বাজপ) কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা, দলের বিধিমালাসহ ছয়টি বিষয়ে তথ্য ঘাটতি ছিল। ফলে দলটিকে বাছাইয়ে বাদ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বাজপ মুখপাত্র কাজী শামসুল ইসলাম বলেন, ইসিকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আদালতে রিট পিটিশন করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাদ পড়া আরেক দল বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (বাসদ-মাহবুব) পাঠানো চিঠিতে তথ্য ঘাটতির কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ইসিতে আগে থেকে নিবন্ধিত ‘বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ’ নামে আরেকটি দল রয়েছে জানিয়ে বলা হয়, দলের নামের বানান ভুলের কারণে তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাসদের (মাহবুব) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহিন উদ্দিন চৌধুরী লিটন বলেন, নিবন্ধন আবেদনে অতীতের যে কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ৫ শতাংশ ভোটপ্রাপ্তির প্রত্যয়নপত্রে ‘বাংলাদেশ’ শব্দের জায়গায় ‘বাংলাদেশের’ লেখার কারণ দেখিয়ে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ভুলটি ছিল নির্বাচন কমিশনের, তাদের নয়। আর সামান্য একটি শব্দগত ভুলের কারণে এই বাদ দেওয়ায় তাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন