সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে নিহত হয়েছেন ১৩ জন : প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। বিএনপি-জামায়াতের সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে ৬০০টির বেশি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহর এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে এ ধরনের সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে সারা দেশে ৬০০টির বেশি যানবাহনে ভাঙচুর করেছে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা। যার মধ্যে ১৮৪টি যাত্রীবাহী বাস, ৪৮টি ট্রাক, ২৮টি কাভার্ডভ্যান/মালবাহী লড়ি/কনটেইনার, তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, চারটি প্রাইভেটকার ও ১১টি পিকআপভ্যান রয়েছে। এই একই সময়ে পাঁচটি ট্রেন- যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেন, ঢাকা কমিউটার ট্রেন, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন ও টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনে অগ্নিসংযোগ এবং ১৫টি মোটরসাইকেল, তিনটি লেগুনা, একটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস (মধ্যরামপুরা, ফেনী) ও একটি অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, এ সময়ে একটি উচ্চ বিদ্যালয় (চর শাহা উচ্চ বিদ্যালয়, সোনাগাজী, ফেনী), ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ধোলাইপার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ; পূর্ব চান্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়দেবপুর গাজীপুর; টি এন টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর সদর; মাস্টারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হাতিবান্ধা, লালমনিরহাট; পড়শীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গফরগাঁও, ময়মনসিংহ; নিশ্চিন্ত পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্দর, চট্টগ্রাম; বাজিতখিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুর; মৌচাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কালিয়াকৈর, গাজীপুর; হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নান্দাইল, ময়মনসিংহ; মনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ; পুলেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ; দক্ষিণ পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতপুর, খুলনা); চারটি বসতঘর; একটি বৌদ্ধমন্দির (রামু, কক্সবাজার, একটি নৌকাসহ সর্বমোট ৩২৮টি যানবাহন ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধে ড্রাইভার, হেলপার, পুলিশ, বিজিবি, শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু মানুষ হতাহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। বিএনপির ক্যাডাররা অসংখ্য যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুনতিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতার ঘটনায় সারা দেশে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় নিহত হন নয়জন, বিজিবির দুই সদস্য আহত এবং একটি রিকুইজিশনকৃত যানবাহনের ক্ষতিসাধন হয়। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন জেলায় ৪৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিআরটিসি বাস ডিপোর বাস রক্ষা করতে গিয়ে একজন আনসার সদস্য ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হন। দুইজন আনসার সদস্য হোসেন আলী ও সুমন আলী বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হন। বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের চিকিৎসাসেবা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা, অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড প্রভৃতি অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য দেশে দক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচারব্যবস্থা ও প্রচলিত আইন রয়েছে। হরতাল ও অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণপূর্বক বিভিন্ন আইনি কার্যক্রমও চলমান।
মন্তব্য করুন