ভিডিও

সামনের একটি ফাঁকা সিট

ফুলের তোড়া রেখে শহীদ আহনাফকে স্মরণ করল সহপাঠীরা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৪, ০৯:১০ রাত
আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০২৪, ০৯:১০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন শহীদ আহনাফ (১৭)। কোটা সংস্কার আন্দোনকে ঘিরে সংঘর্ষে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। তার স্মরণেই ওই সিটটি ফাঁকা রাখেন সহপাঠীরা। তারা সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফুল দিয়ে তৈরি তোড়া রেখে তাদের সহপাঠী আহনাফের প্রতি সম্মান জানান।

ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজে আজ রোববার পরীক্ষা দিতে আসেন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রত্যেকেই নির্ধারিত সময়ে যে যার যার সিটে গিয়ে বসেন। তবে পরীক্ষা কক্ষের একটি সিট তখনও ফাঁকা। ওই সিটে রাখা ছিল একটি ফুলের তোড়া। আর তাতে একটি কাগজে লেখা 'শফিক উদ্দিন আহম্মেদ আহনাফ'।

ঢাকার বিএএফ শাহীন কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন শহীদ আহনাফ (১৭)। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর ১০-এ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। তার স্মরণেই ওই সিটটি ফাঁকা রাখেন সহপাঠীরা। তারা সেখানে ফুলের তোড়া রেখে আহনাফের প্রতি সম্মান জানান।

আহনাফের সহপাঠীরা এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে তারা আহনাফের ত্যাগ ভুলে যাননি। আহনাফ তাদের স্মৃতিতে রয়ে গেছেন এবং চিরদিনই থাকবেন। আহনাফকে স্মরণের বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেন কলেজটির ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষক বোরহান উদ্দিন। মূলত আজ একাদশ শ্রেণির হিসাববিজ্ঞান পরীক্ষার সময় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।  

বোরহান উদ্দিন বলেন, 'আহনাফের জায়গা কেউ নিতে পারবে না। ও একজন বীর। আমরা ওকে বীর হিসেবেই মনে রাখব। এ ভাবনা থেকেই আমরা আজ ওর আসনে ফুলের তোড়া রেখেছিলাম।'

আহনাফের ২০২৫ সালে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। রাজধানীর মধ্য পাইকপাড়ায় পরিবারের সঙ্গে থাকত আহনাফ। বাবা-মা বার বার বার আন্দোলনে যেতে নিষেধ করলেও শুনতেন না তিনি। বাইরের পরিস্থিতি ভালো না থাকায় গত ৪ আগস্ট সকাল থেকেই আহনাফকে আন্দোলনে যেতে নিষেধ করছিলেন তার বাবা-মা। তবে আহনাফ শোনেননি।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঘর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফোনে আহনাফ তার মাকে জানিয়েছিলেন তিনি মিরপুর ১০ নম্বরে আছে। এটাই ছিল আহনাফের সঙ্গে তার মায়ের শেষ কথা। এরপর একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোন পেয়েই আহনাফের পরিবারের সদস্যরা মিরপুরের ইসলামিয়া হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে এক ব্যক্তি আন্দোলনে মারা যাওয়া কয়েকজনের ছবি দেখান। সেই ছবিগুলোর মধ্যে একটি ছবি ছিল আহনাফের। 

এরপর আহনাফের পরিবারের সদস্যদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয়। সেখানে গিয়ে মর্গে আহনাফের লাশ পান পরিবারের সদস্যরা। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাদির কবরে আহনাফকে দাফন করা হয়। আহনাফের ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে তিনি ব্যবসা করবেন। পাশাপাশি গানের ব্র্যান্ড গড়ে তোলারও ইচ্ছা ছিল তার।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS