স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া পৌরপার্ক অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সেখানে নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। বেড়েছে ‘ফিটিং পার্টি’র দৌরাত্ম। ফিটিং পার্টির প্রধান টার্গেট প্রেমিক যুগল। প্রেমিক জুটি যখন পার্কে যায় তখনই পড়ে বিপদে। একটু নিরালায় ঝোঁপঝাঁড়ে গল্প করার অজুহাতে তাদের দিকে হামলে পড়ে ফিটিং পার্টির সদস্যরা। তাদের ‘প্রেম-ভালবাসা’কে পুঁজি করে জিম্মি করে চাঁদাবাজি।
অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে প্রেমিক-যুগলের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় টাকা বা মোবাইল ফোন। না দিলেই চলে আসে মহা-বিপদ। মারপিট এমনকি ছুরিকাঘাতও করা হয় প্রেমিক যুগলকে। সেইসাথে শুধু প্রেমিক যুগলই নয়, পার্কে বেড়াতে আসা সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়।
এই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবারও (২৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রেমিক যুগলের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে মহিদুল ইসলাম ও ইমু নামে এক প্রেমিক যুগলের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় দুই যুবক। এ সময় তারা মোবাইল ফোন ফিরে পেতে হলে ১০ হাজার টাকা চাঁদা চায়। নইলে তাদের ছুরিকাঘাত করবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু এ সময় মহিদুল ইসলাম ও ইমু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং মোবাইল ফোন ফেরৎ চান।
এ নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হলে লোকজন জড়ো হয় এবং ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত দুই জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই আবার ঘটে ‘চোরের ওপর বাটপারি’র মত ঘটনা। এলাকার কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে আটক মহিদুল হাসান ও মাহমুদুল হাসানকে মারপিট করে। এ সময় তারা মহিদুল হাসানকে ছুরিকাঘাত করে ইমুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ফোন ফের ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এরপর ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে মহিদুল হাসান ও মাহমুদুল হাসানকে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনাস্থলে যাওয়া স্টেডিয়াম ফাঁড়ির এসআই আল আমিন দৈনিক করতোয়া‘কে বলেন, মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক মহিদুল ইসলাম (২৫) ও মাহমুদুল হাসান (১৮)কে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মহিদুল ইসলামকে বাম উরুতে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার উরুতে ৮ ইঞ্চি গর্ত হয়েছে।
তার ব্যাপক রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। তাদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। বাদি মামলাও করেনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বগুড়া পৌরপার্ক এখন অপরাধীরাদের অভ্যয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। গত দুই মাসে ওই পার্কে ১০টির বেশি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া একাধিক ছুরিকাঘাতের ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া পার্কটি মাদকাসক্তদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
এ সব অপরাধীদের হাতে পার্কে বেড়াতে আসা সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। মানুষের নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। সেইসাথে ওই পার্কে অনৈতিক কার্যকলাপও হয়। প্রকাশ্যে ঘটে মাদক বিক্রি ও সেবন। ভ্রাম্যমাণভাবে বিক্রি হয় গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক।
এ ব্যাপারে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শরাফত ইসলাম দৈনিক করতোয়া‘কে বলেন, পৌরপার্কে অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ছিনতাইয়ের অভিযোগে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, পার্কে মানুষের নিরাপত্তা বিধানে আজ থেকে পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।