ঝাড়ু মিছিল নিয়ে গ্রাহকদের পল্লীবিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বাউফল জোনাল অফিসের সামনে ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গ্রাহকরা। সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় প্রায় শতাধিক বিক্ষুব্ধ নারী ও পুরুষ গ্রাহক এই মিছিল করে।
পরে, বেলা ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের সার্বিক সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দিলে তারা বাড়ি ফিরে যান।
জানা যায়, প্রত্যেকটি বিলেই অতিরিক্ত ৫০ থেকে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বেশি যোগ করা হয়েছে। অস্বাভাবিক এসব বিল নিয়ে অফিসে গেলে সমিতির লোকজন কোনো সমাধান দেন না। পরের মাসে সম্বনয় করে দেয়ার আশ্বাস দিলেও তা আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ। পরের বার গেলে বরং অফিসের লোকজন দুর্ব্যবহার করেন।
তাদের দাবি, বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন বাড়িতে না গিয়ে অফিসে বসে বিল তৈরি করেন। যার কারণে ব্যবহৃত ইউনিটের সাথে কোনো মিল নেই। তারা মনগড়া বিল তৈরি করে দেন।
উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক মো. দেলোয়ার মৃধা। গত মে মাসে তার বিল এসেছে ১৮৪ টাকা। জুন মাসে তা বেড়ে হয়েছে ১৩৭৬ টাকা। ভুক্তভোগী এ গ্রাহক বলেন,‘ বাড়িতে কেউ বিল করতে যায়নি। তারা অফিসে বসেই মনগড়া এ বিল তৈরি করেছেন। একাধিক বার অফিসে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।
আরেক গ্রাহক মনির রাঢ়ী জানান, মে মাসে তিনি ৩৫ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন। তার বিল হয় ২৩৫ টাকা। জুন মাসে তার বিল বাড়িয়ে করা হয় ১১২৫ টাকা। একই বাড়িতে একই রকম বিদ্যুৎ ব্যবহার করার পরেও মনগড়া ভাবে তার বিদ্যুৎ বিল বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুননুর হোসেন নামে আরও এক গ্রাহক জানান, গত মাসের চেয়ে এ মাসে (জুন) প্রায় দেড় হাজার টাকা বেশি বিল এসে। তিনিও অফিসে গিয়ে কোনো সমাধান পাননি।
এদিকে, বাড়িতে না গিয়ে অফিসে বসে বিদ্যুৎ বিল তৈরির সত্যতা পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউফল জোনাল অফিসের এক কর্মকর্তা এমন তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, এপ্রিল ও মে মাসে দুইটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিদ্যুৎ লাইনে ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিদ্যুৎ লাইন সচল করতে সকল লোকবল মাঠে কাজ করে। যার কারণে বিলিং কাজে সমস্যার সৃষ্টি হয়। একই সাথে গত কয়েক মাস ধরে নানান বৈষম্যের প্রতিবাদ ও দুই দফা দাবি নিয়ে জোনাল ও সব জোনাল অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্মবিরত চলছে। যার কারণে লোকবল সংকট দেখা দিয়েছে। তাই কিছু বিল অফিসে বসে তৈরি করা হয়েছে।
বাউফল জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী গগণ সাহা বলেন, ‘অনেক বড়উপজেলা। গ্রাহক সংখ্যা লক্ষাধিক। কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে। অফিসে আসলে সমাধান করে দেওয়া হবে। অফিসে গিয়েও সমাধান না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, লোকবল সংকট। যার কারণে কাজে ধীরগতি থাকে। এতে অনেক গ্রাহক উত্তেজিত হয়ে চলে যায়। তারপরেও গ্রাহকদের সাথে অফিসের কারো দুর্ব্যবহার করার প্রমাণ মেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বশির গাজী বলেন, বিদ্যুৎ বিল অতিরিক্ত বেশি করা হয়েছে এমন দাবি নিয়ে শতাধিক গ্রাহক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারা বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বিক্ষোভও করেছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা বিলের অসঙ্গতির সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন