ভিডিও

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ১০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানা এবং আদালতে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৮:৫৭ রাত
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৮:৫৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : পৃথক সাতটি মামলায় জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সাংবাদিকসহ শিক্ষক/প্রভাষক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ মিলে মোট ১২৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় জড়ানো হয়েছে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় কর্মরত ১০ জন সাংবাদিককে। 
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের সুযোগ নিয়ে মামলায় বাদীর নিজ বাড়িতে সংঘবদ্ধভাবে হাতে লাঠিসোঁটা, ফালা, লোহার রড়, রিভালভার, পেট্রোল ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে দলবদ্ধভাবে লুটতরাজ ও অগ্নি সংযোগ, মারপিট ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে ১০৫ জনের বিরুদ্ধে জয়পুরহাট জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ক্ষেতলাল পৌর এলাকার মালিপাড়া মহল্লার মৃত নেজাম উদ্দিনের ছেলে নূর আলম।

ওই মামলায় ক্ষেতলাল উপজেলার ৬ জন সাংবাদিককে আসামী করা হয়। আসামীরা হলেন আজিজার রহমান (দৈনিক ভোরের দর্পণ), আনোয়ার হোসেন (দৈনিক নয়াদিগন্ত), শাহিনুর ইসলাম (দৈনিক খোলা কাগজ), আহম্মেদ পান্না (দৈনিক জনবাণী), ওয়াকিল আহম্মেদ (দৈনিক সূর্যদ্বয়), মুরাদ হোসেন (আজকের দর্পণ)।

এছাড়া গত ৮ অক্টোবর ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় বিএনপির অফিসে হত্যা, জুলুম, আলামত গোপন সহ গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষ্য বিনষ্ট করা এবং মালামাল ছিনতাই এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষেতলাল উপজেলা ধনতলা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্বাস আলী বাদী হয়ে ঢাকা পল্টন থানায় ৭০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় ক্ষেতলাল উপজেলা দৈনিক সমকাল ও করতোয়া পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম আকন্দকে আসামী করা হয়।

এ দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগষ্ট অসহযোগ কর্মসূচী চলাকালে আসামীরা লাঠি, অস্ত্র, ককটেল ও বিস্ফোরক নিয়ে দলবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এতে গুলিতে শিক্ষার্থী বিশাল মারা যায়। অন্য মামলার এজাহারে আসামীরা লাঠি, অস্ত্র, ককটেল ও বিস্ফোরক নিয়ে দলবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নিহতের ঘটনায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের শিক্ষার্থী বিশালের বাবা মজিদুল বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় ১২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলায় দৈনিক কালের কন্ঠ ও নিউজ ২৪ টিভি জেলা প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন চৌধুরীকে আসামী করা হয়। একইভাবে গত ১৮ আগষ্ট বিশাল হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হলেও অন্য ৩টি মামলায় হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনার অভিযোগ করা হয়।

এছাড়া গত ২৮ আগষ্ট জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা করেন নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা জগদীশপুর গ্রামের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান। ওই মামলায় ১১৯ জনের মধ্যে আলমগীর হোসেন চৌধুরী, এস এম মিলন (আজকের কাগজ) এবং আব্দুর রাজ্জাক (মুক্ত সকাল) কে আসামী করা হয়।

একইভাবে গত ১ সেপ্টেম্বর কালাই উপজেলার তালোড়া বাইগুনি গ্রামের মিয়া নামে এক ব্যক্তি হামলার শিকার এমন অভিযোগ ৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে ওই মামলায় সাংবাদিক আলমগীর হোসেন চৌধুরীকে আসামী করা হয়।

এসব মামলার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা সরজমিনে পৌর মহল্লার মালিপাড়া গ্রামে বাদীর নিজ বাড়িতে গেলে দেখতে পায় তার বাড়িঘর অক্ষুণ্ণ অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোন আগুনে পোড়ানো কিংবা ভাংচুর এর চিন্হ নেই। সাংবাদিকদের দেখে ওই গ্রামের স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। সাংবাদিকরা তাদের গ্রামে ককটেল নিক্ষেপ ও মারামারি, অগ্নি সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান এই গ্রামে কখনোই এই ধরণের ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে মামলার বাদী নূর আলমের স্ত্রী সাবিনা আক্তার এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তাদের বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটেনি। তিনি সাংবাদিকদের পুরো বাড়ি ঘুরে দেখান। তার বাড়িঘরের সব কিছু ঠিকঠাক আছে বলেও জানান।

ক্ষেতলাল উপজেলার একাধিক সাংবাদিক, শিক্ষক, বিএনপির সমর্থক ও নিরীহ জনসাধারণকে জড়িয়ে কতিপয় ব্যক্তি তাদের নিজের স্বার্থ রক্ষায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাংবাদিক সহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা করতে মেতে উঠায় জনসাধারণের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা ও উপজেলার সংবাদকর্মীরা। তাদের অভিযোগ একটি কুচক্রী মহল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের হয়রানী বন্ধে তথ্য ও আইন উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেছেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS