ভিডিও

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

ভক্তদের মাঝে বিষাদের সুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০৭:২৪ বিকাল
আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০৭:২৪ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের  সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচদিনব্যাপি এই উৎসবের জন্য ভক্তদের আবার অপেক্ষা করতে হবে এক বছর। প্রতি বছরের মত উৎসব উপলক্ষ্যে বগুড়ার সবগুলো পূজামন্ডপ ভাসছিল আনন্দ ও আলোর বন্যায়।

গত চার দিন আনন্দ উল্লাসের পর বিজয়া দশমীতে দেবীর বিদায়ের করুণ সুর বেজে ওঠে ভক্তদের মাঝে। বিদায় জানাতে আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলের পর থেকে বগুড়ায় করতোয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। একের পর এক শহর ও শহরের আশেপাশের বিভিন্ন মন্ডপ থেকে ঘাটগুলোতে প্রতিমা আসতে থাকে বিসর্জনের জন্য।

এর আগে শহরের বিভিন্ন এলাকার পূজারীরা প্রতীমা ট্রাকে নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে নদীর ঘাটে নিয়ে যায়। 
মহালয়ার মধ্য দিয়ে ২ অক্টোবর এবারের দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওইদিন থেকেই দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এরপর গত বুধবার ষষ্ঠী থেকে পাঁচ দিনের যে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল, আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এ আয়োজন।

তবে এবছর মহা নবমীর দিনেই পড়েছে দশমীর তিথি। নবমীর পূজা শেষে শনিবারই দশমী বিহিত পূজা এবং দর্পন বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের নিয়ম থাকলেও এবার সেটি না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের উপদেষ্টা পুরোহিত প্রণব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের নিয়ম থাকলেও আরেকটি নিয়ম আছে। ওই দিনের মধ্যে যদি শ্রবণা নক্ষত্রের শেষ প্রাত হয়, তাহলে দর্পন বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে।

কিন্তু গত শনিবার  শ্রবণা নক্ষত্রের শেষ প্রাত হচ্ছে অনেক রাতে। ফলে রাতে তো বিসর্জন দেওয়া যাবে না। এজন্য আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) বিসর্জন দেয়া হয়েছে। তবে দশমীর যে পূজা, সেটি গত শনিবারেই করা হয়েছে।  কিন্তু দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে আরো অনেক কিছু সংযুক্ত থাকে যেমন সিঁদুর খেলা, মাকে মিষ্টি দান, শোভাযাত্রা এবং প্রতিমা বিসর্জন আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এদিকে,গত শনিবার বিজয়া দশমীতে শেষবারের মত দেবীর আশির্বাদ কামনায় নারী-পুরুষ,শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের  ভক্ত নিবিষ্ট মনে প্রার্থনা করেন। প্রতিটি মন্ডপে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয়। দেবীর বিদায় বেলায় চলেছে ঢাক আর শঙ্খধ্বনি, টানা মন্ত্রপাঠ, উলুধ্বনি, অঞ্জলি।

সকালে দশমী পূজা আরম্ভ হয়। করা হয় পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন। শাস্ত্রমতে এদিন দেবী দুর্গা মর্ত ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যান তার সন্তানদের সাথে নিয়ে। এরপর আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শারদীয়া দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়। উৎসবকে ঘিরে বাঁধভাঙ্গা আনন্দে মেতে উঠেছিল ভক্তরা। প্রতি বছরের মত এবারও মন্ডপে মন্ডপে অনুষ্ঠিত হয় সিঁদুর খেলা, আনন্দ উল্লাস আর নাচগান।

হিন্দু সধবা নারীরা দেবী প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে  নিজেরা একে অন্যকে  সিঁদুর পরান। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য করতোয়া নদীর মালতিনগর এসপিঘাট, দত্তবাড়ির কদমতলী ঘাট, চেলোপাড়া, লালমাটির ঘাটসহ শহরের আরও কয়েকটি ঘাটে লাইন করে ভক্তরা  দেবী বিসর্জন করেছেন।

বগুড়ার বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ৬২৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বগুড়া সদরেই ১১৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয় । প্রতিবছরের মত এবছরও  শহরের বেশকিছু পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হয় আরতি, উলধ্বনি, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শঙ্খধ্বনিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা।

এদিকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রশাসনের পক্ষথেকে সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যববস্থা নেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি বগুড়ার ফায়ার সার্ভিস কর্মীদেরও তৎপরতা দেখা গেছে, যাতে দেবী বিসর্জনের সময় কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS