ভিডিও

দৃষ্টি হারানোর পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ প্রান্তিক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ১১:০৫ রাত
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২৪, ১১:০৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শুরু থেকেই যোগ দেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আল মাহিয়ান প্রান্তিক। আন্দোলনের প্রথম দিকে গত ১৮ জুলাই প্রান্তিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলি লেগে গুরুতর আহত হন।

তখন থেকে তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন। তারপরও তার ডান চোখ ভালো না হওয়ায় ওই চোখ দিয়ে এখন আর কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। পাশাপাশি বাঁ চোখেও ঝাপসা দেখছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে বিদেশে গিয়ে এখন চোখের চিকিৎসা করাতে হবে। ইতোমধ্যে প্রান্তিকের পরিবার বিদেশে যাওয়ার সকল ব্যবস্থাও করেছেন।

আল মাহিয়ান প্রান্তিক জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের চাকলমুয়া গ্রামের আশরাফ আলী মন্ডলের ছেলে। তার বাবা জেলার ক্ষেতলাল সরকারি সাঈদ আলতাফুন্নেসা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক। ছেলের পড়াশুনার জন্য পরিবার নিয়ে বগুড়া শহরে বসবাস করছেন।

তবে বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতেই আছেন। আজ শুক্রবার সকালে চাকলমুয়া গ্রামে গিয়ে পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৫ জুলাই থেকে বগুড়ার সাতমাথায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামেন শতশত শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে ছিলেন আল মাহিয়ান প্রান্তিক।

১৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাতমাথায় ছাত্ররা অবস্থান নিলে পুলিশ ছাত্রদের ওপর টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পুলিশের এমন তান্ডবে ছাত্ররা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। তখন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আল মাহিয়ান প্রান্তিকের মাথা, ঘাড় ও ডান চোখে রাবার বুলেট লেগে গুরুতর আহত হলে অন্যরা তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

এরপর তার জ্ঞান ফিরলেও তিনি ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। পরে চিকিৎসকরা তার শরীর থেকে অপারেশনের মাধ্যমে গুলি বের করলেও ডান চোখে তিনি আর দেখতে পাচ্ছেন না, আবার বাম চোখেও ঝাপসা দেখছেন। প্রায় দু’মাস চিকিৎসার পর তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

আল মাহিয়ান প্রান্তিক বলেন, চিকিৎসা নেয়ার পর ঝাপসা লাগা বাঁ চোখে চশমার সাহায্যে একটু দেখতে পাচ্ছি। তবে ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তিনি আরও বলেন, আমি চোখে দেখি আর না দেখি গত ১৮ জুলাইয়ের কথা কখনও ভুলবো না।

৫ আগস্ট দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। প্রান্তিকের বাবা আশরাফ আলী মন্ডল বলেন, চিকিৎসক ছেলেকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেছেন। আমি সেই ব্যবস্থায় করছি। আমার যা আছে সবকিছু দিয়ে হলেও ছেলের চোখের আলো ফেরাতে চাই।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS