ভিডিও

কারিগরি সাপোর্ট না দিয়েও যানবাহনে ডিজিটাল নাম্বার প্লেটের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৪, ০৯:৪১ রাত
আপডেট: অক্টোবর ১৫, ২০২৪, ১০:৫৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

রাহাত রিটু : মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নাম্বার প্লেট দেওয়ার নামে গত এক যুগে প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা আদায় করা হলেও মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা ডিজিটাল নাম্বার প্লেট থেকে কোন সুবিধা পাচ্ছেনা। মোটরসাইকেল চুরি রোধ, অপরাধে ব্যবহৃত মোটরযান শনাক্তকরণ ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীকে শনাক্ত করণ কোনোটিই করা যাচ্ছে না।

এই নাম্বার প্লেট থেকে মোটরসাইকেলের মালিক এবং ট্রাফিক পুলিশ কোন সুবিধা আদায় করতে পারছে না। ফলে এই প্লেট নিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সীমা নাই। মোটরসাইকেল সুরক্ষার জন্য ডিজিটাল নাম্বার প্লেট লাগানো হলেও তা থেকে সুবিধা যদি না পাওয়া যায় তবে এ্র প্রয়োজন কী এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।  

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল নম্বর প্লেটের জন্য মোটরসাইকেল মালিকদেরকে ২২শ’ ৬০ টাকা করে দিতে হয়। গত ১২ বছরে প্রায় ৩৪ লাখ ৮১ হাজার মোটরসাইলের ডিজিটাল নাম্বার প্লেটের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা মোটরযানের জন্য যে নম্বর প্লেট দেয়, সেটিতে রেট্রো-রিফ্লেক্টিভ নম্বর প্লেট ও রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন (আরএফআইডি) ট্যাগ থাকে।

আরএফআইডি হলো একধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উইন্ডশিল্ড স্টিকার, যা মোটর যানের উইন্ডশিল্ডে ভেতরের দিক থেকে সেলফ এডহেসিভ দ্বারা লাগানো হয়। এই ট্যাগ মোটরযান ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর দ্বারা মোটর যানের অবস্থান জানা সম্ভব এবং এক মোটরযানে সংযোজিত ট্যাগ অন্য মোটরযানে ব্যবহার করা যায় না।

ডিজিটাল নম্বর প্লেটের জন্য মোটরসাইকেলের জন্য দিতে হয় ২ হাজার ২৬০ টাকা কিন্তু মোটরযান মালিকরা জানিয়েছেন, মোটরযান চুরি প্রতিরোধ, অপরাধে ব্যবহৃত মোটরযান শনাক্তকরণ ও ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীকে শনাক্ত কোনোটিই করা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) এর আরও একটি সূত্রে জানা গেছে ২০১৩ সাল থেকে দেশে মোট ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৮৮ টি যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ৯০০টি মোটরসাইকেল রয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক মোটরসাইকেল দেশ চলাচল করছে।

এর নাম্বার প্লেট বাবদ প্রায় ৭৮৭ কোটি টাকা আদায় করা হয়। বিআরটিএ‘র একটি সূত্র জানায় ডিজিটাল নাম্বার প্লেটের কাজ করে টাইগার আইটি। এ বিষয়ে বিআরটিএ বগুড়া অফিসের তেমন কিছু জানা নাই। মোটরসাইকেল ট্রাকিংয়ের জন্য উত্তরাঞ্চলে কোন টাওয়ার নাই। এ কারণে হারানো মোটরসাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব নয়। ঢাকায় কয়েকটি টাওয়ার থাকলেও সারা দেশের অন্য কোন জেলায় নাই। যে প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল প্লেট দিচ্ছে তাদেরই দায়িত্ব টাওয়ার করা কিন্তু তারা করেনি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ট্যাগের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, চ্যাচিস নম্বর ও মোটরযানের ধরন-সংক্রান্ত কোড থাকে, ফলে এ ট্যাগযুক্ত কোনও মোটরযান কোনও আরএফআইডি স্টেশন অতিক্রমকালে স্টেশনে অবস্থিত এনটেনা ওই কোড বা সিগন্যাল স্টেশনে অবস্থিত অপর একটি ডিভাইস আরএফআইডি রিডারে পাঠায় এবং রিডার তা নেটওয়ার্ক কানেকটিভিটির মাধ্যমে সেন্ট্রাল সার্ভারে পাঠায়।

নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মোটরযানের অবস্থানসহ যাবতীয় তথ্য দৃশ্যমান হয়। টাওয়ার না থাকায় মোটরযানের অবস্থানসহ যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা। টাওয়ার না থাকার পর বা কোন কারিগরি সাপোর্ট না থাকার পরও টাইগার আইডি কর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে। বগুড়ার একাধিক মোটরসাইকেলের মালিক জানান, ডিজিটাল নাম্বার প্লেটের যদি কোন সুবিধা নাই পাওয়া যায় তবে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের উচিৎ ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল করে জনগনকে রেহায় দেওয়া।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS