নামেই ৫০ শয্যা, জনবল নেই ৩১ শয্যারও
জনবল সংকটে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন ধরে চলছে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকট। ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটি প্রতিদিন হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন অল্প সংখ্যক চিকিৎসক। সে কারণে হাসপাতালটিতে মিলছে না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীদের ছুটতে হচ্ছে জেলা ও বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে এ হাসপাতালটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। অথচ এখনও এ হাসপাতালে ৩১ শয্যারও জনবল নেই। অনেক চিকিৎসক, স্টাফের পদ ফাঁকা। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন ৪-৫ শতাধিক রোগী।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় প্রতিদিন রোগীর ভিড় জমে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সেবা ছাড়াই ফিরতে হচ্ছে অনেক রোগীকে। এ হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোরে ৪শ’ থেকে ৫শ’ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ভর্তি রোগী সব সময় ১শ’ থেকে ১২০ জন থাকেন। এতে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ রোগী এবং রোগীর স্বজনরা। নার্সদের ব্যবহার ও খাবারের মান নিয়ে আছে অনেক অভিযোগ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৩১ শয্যায় হাসপাতালে সরকারিভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ১৬ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও হাসপাতালটিতে চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ৮ জন, ৮টি পদ শূন্য। সিনিয়র-জুনিয়র নার্স ৩৭ জনের স্থানে রয়েছেন ৩২ জন, ৫টি পদ শূন্য। স্বাস্থ্য সহকারী ৮১ জনের স্থানে রয়েছে ৫৫ জন, ২৬টি পদ শূন্য। আয়া ২১ জন স্থানে রয়েছে ১১ জন, ১০টি পদ শুন্য।
এছাড়াও ৫০ শয্যার হাসপাতালে সরকারিভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ২৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৯ জন, ১৭টি পদ শূন্য। সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই এসেছেন চিকিৎসা সেবা নিতে। উপচেপড়া ভিড় দেখে অনেকেই সেবা না নিয়ে বিরক্ত হয়ে চলেও যাচ্ছেন। অনেকে অপেক্ষা রয়েছেন সিরিয়ালের জন্য। আবার অনেকে ভর্তি হচ্ছেন ভালো মানের চিকিৎসার জন্য।
আরও পড়ুনউপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার আক্তার জাহান বলেন, এখানে অনেক রোগী আসেন। আমাদের আয়ার সমস্যা আছে। সরকারি কোনো আয়া নেই। দু’জন ছিলেন, তারাও অবসরে গেছেন। এদিকে ক্লিনারের সমস্যা। সরকারি ক্লিনার মাত্র তিনজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, আউটডোরে প্রায় ৫শ’ রোগী দেখা যায়। এ রোগীগুলোকে ভালো সেবা দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন। আমাদের ডাক্তার থেকে শুরু করে ক্লিনারসহ সব জায়গায় লোকবল অনেক কম। প্রতি মাসেই লোকবল চেয়ে প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়। আশা করা হচ্ছে দ্রুত লোকবল নিয়োগ হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এটিএম ওবায়দুল্লাহ বলেন, বহির্বিভাগে অনেক রোগী এসে সেবা নিয়ে যাচ্ছেন। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা আশা করছি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ হবে।
মন্তব্য করুন