৭ মাসে কাজের অগ্রগতি ১৫ শতাংশ
বগুড়ার শেরপুরে শেরুয়া-ভবানীপুর রাস্তার কাজে মন্থর গতি, বাড়ছে জনদুর্ভোগ
শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা : শেরপুরের শেরুয়া বটতলা থেকে ভবানীপুর পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজ চলছে মন্তর গতিতে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তায় জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে। সাত মাসে মোট কাজের ১৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
বিশেষ করে শেরুয়া বটতলা থেকে মির্জাপুর ব্র্যাক বটতলা পর্যন্ত এই রাস্তার দুপাশে একাধিক সেমি অটো রাইস মিল, অটো রাইস মিল, বাছাই মিলসহ বিভিন্ন ধরণের কল-কারখানা থাকায় জনসাধারণের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারেরও অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে শেরুয়া বটতলা থেকে ভবানীপুর পর্যন্ত ১২ হাজার ৩০ মিটার রাস্তা রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্ত ও শক্তিশালীকরণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে প্রাক্কলিক মূল্য ১৯ কোটি ৫৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরবর্তিতে এই কাজটি রাজশাহীর বোয়ালিয়া ঘোড়ামারার সাহেব বাজার এলাকার বরেন্দ্র কন্সট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেনের সাথে ১৭ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার ৭০৫ টাকায় চুক্তি সম্পন্ন হয়। কাজটি শুরু করেন চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কিন্ত সাতমাস অতিবাহিত হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি।
চুক্তিতে কাজটি ২০২৫ সালের ৭ আগস্টের মধ্যে সমাপ্তির কথা থাকলেও সম্ভাবনা একেবারেই কম। কেননা তারা গত সাতমাসে কাজটির মাত্র ১৫ শতাংশ সমাপ্ত করতে পেরেছেন। জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির কাজ ধীরগতি হওয়ায় প্রতিনিয়তই ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুনপ্রশস্ত করার জন্য রাস্তার পাশে মাটি খুঁড়ে রেখেছেন বেশ কয়েক মাস হলো ফলে রাস্তা এখন সংকুচিত হয়ে যানচলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। যার কারণে এই রাস্তায় ধান ও চালের গাড়ি চলাচলে প্রতিনিয়ই নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই রাস্তার দু’ধারে (বিশেষ করে শেরুয়া বটতলা হতে ব্র্যাক বটতলা পর্যন্ত) ২০ থেকে ২৫টি সেমি অটোরাইস মিল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থাকায় তাদের মালামাল বহনকারি গাড়ি নিয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
এমনকি অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। মির্জাপুর ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের কফিল উদ্দিন জানান, ঠিকাদারের লোকজন বালির পরিবর্তে মাটি মিশ্রিত বালি ও নিন্মমানের খোয়া ব্যবহার করছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কিন্ত তেমন কোন কাজ হচ্ছেনা।
চাতাল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর ইসলাম জানান, রাস্তার একধার খুড়ে রাখায় আমাদের ধান ও চাল আনা নেয়ায় অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শফিউল আলম সুমন জানান, আগামি সপ্তাহ থেকে কাজ পুরোপুরি শুরু হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে। এছাড়া নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের তথ্যটি সঠিক নয়, শিডিউল অনুযায়ি সকল সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ জানান, কাজের গতি বৃদ্ধির জন্য ঠিকাদারকে তাগাদা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও একজন সহকারি প্রকৌশলীকে সবসময় তদারকি করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, কাজের কোন ত্রুটি মেনে নেয়া হবেনা। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত মোট টাকার সাড়ে ৭ শতাংশ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন