সৌন্দর্য ধরে রাখতে ৬০০ নারীর রক্ত পান করেছিলেন এলিজাবেথ বাথরি !
এলিজাবেথ বাথরি ! ধরা হয়, পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী সিরিয়াল কিলার। যিনি সিরিয়াল কিলার তো বটেই, নৃসংশতার চরমে পৌঁছেছিলেন। যা ইতিহাসে বিরল। রক্ষক হয়েও ভক্ষকের ভূমিকাই বেশি পালন করেছিলেন এই রানি। হাঙ্গেরির রানি ছিলেন এলিজাবেথ বাথোরি, যিনি সৌন্দর্য ধরে রাখতে হয়েছিলেন সিরিয়াল কিলার।
নারীরা নিজেদের সৌন্দর্যের ব্যাপারে একটু যেন বেশিই সচেতন। ফিট থাকতে আর নিজের সৌন্দর্য ধরে রাখতে কতো কিছুই না করে থাকেন। তবে এই নারী নিজের রূপ-যৌবন ধরে রাখতে ৬০০ কুমারী নারীর রক্ত পান করেছিলেন। ইতিহাসবিদরা মনে করেই এই সংখ্যা হাজারেরও বেশি।
নিজেকে সুন্দর রাখতে শুধু যে কুমারী মেয়েদের রক্ত পান করতেন তাই না, সেই রক্তে গোসল করতেন এমনকি তাদের মাংসও খেতেন তিনি। তিনি ছিলেন যেমন বদমেজাজি, তেমনি হিংস্র আর অত্যাচারী।
এলিজাবেথ বিশ্বাস করতেন, কুমারী মেয়েদের রক্ত তাকে চিরযৌবনা রাখবে। আর তাই একের পর এক কুমারীকে হত্যা করতেন তিনি। ইতিহাসে আলোচিত এই সিরিয়াল কিলার পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যার খুনী ছিলেন। যিনি ব্লাড কাউন্টেস বা কাউন্টেস ড্রাকুলা নামেও পরিচিত।
ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাউন্টেস বাথরি তার শিকারদের নির্যাতন করার জন্য যে যে নৃশংস পদ্ধতি ব্যবহার করত, তার মধ্যে ছিল – তাদের নখের নিচে পিন ঢুকিয়ে দেওয়া, তাদের স্তন কামড়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, তাদের ঠান্ডায় জমিয়ে তিল তিল করে হত্যা করা, তাদের আঙুল বা যৌনাঙ্গ কেটে নেওয়া ইত্যাদি। শুধু কৃষক পরিবারের মেয়েদেরই নয়, ভদ্র ঘরের এবং ধনী পরিবারের মেয়েদেরকেও হত্যা করেছিল সে। তাদের শিক্ষাদান করার অছিলায় সে তার দুর্গে আহ্বান জানাত।
এলিজাবেথ কুমারী মেয়েদের খুবই ছোট্ট খাঁচায় বন্দি করতেন। এরপর তাদের সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রেখে শরীরে বরফ পানি দিতেন। যেন তারা ঠান্ডায় জমে মারা যায়।
আরও পড়ুনতার দাস দাসিদের হাতের তালুতে গরম লোহা রেখে দিত। তাদের যন্ত্রণায় পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করত বিকারগ্রস্ত এলিজাবেথ। সাঁড়াশি দিয়ে দাসদের আঙ্গুল টেনে ছিঁড়ে ফেলত। একবার এলিজাবেথ এমন এক কাজ করেন যা ছিল সব নৃশংসতার উর্ধ্বে। এক দাসীর শরীর থেকে মাংস কেটে তাকে দিয়ে রান্না করিয়ে তাকেই খেতে বাধ্য করেছিল সে। এছাড়াও মেয়েদের শরীরে মধু লাগিয়ে সারাদিন বাইরে রেখে দিত। যাতে মৌমাছি এবং অন্যান্য পোকামাকড় তাদের খেয়ে ফেলতে পারে।
টিউডর রাজবংশের পঞ্চম ও সর্বশেষ রানী ছিলেন তিনি। তার বাবা ছিলেন রাজা অষ্টম হেনরি। এলিজাবেথের বয়স যখন মাত্র আড়াই বছর তখন তার মা অ্যান বোলিনকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করা হয় এবং এলিজাবেথকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
স্বামী ফেরেন্সের মৃত্যুর পর এলিজাবেথ আরও বেশি নৃশংস হয়ে ওঠে। সে মেয়েদের নখে, ঠোঁটে, গালের নিচে সুঁই ফুটিয়ে রাখত, শরীর থেকে মাংস কেটে নিত। এলিজাবেথ এভাবেই ক্ষান্ত হয়নি। অনেক পুরুষের জীবনও নিয়েছে। বিয়ের আগে এবং তার স্বামীর মৃত্যুর পর অসংখ্য পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর নতুন একজনকে পেলে আগের জনকে মেরে ফেলত সে। এছাড়াও এলিজাবেথের সম্পর্কে আরও একটি তথ্য জানা যায়, তিনি উভকামী ছিলেন। তবে এ ব্যাপারে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সূত্র: দ্য ভিন্টেজ নিউজ, অল দ্যাট ইন্টেরেস্টিং,উইকিপিডিয়া
মন্তব্য করুন