লালমনিরহাটের সেই আলোচিত আ’লীগ নেতা সুমন গ্রেপ্তার
লালমনিরহাট প্রতিনিধি : অর্থ পাচার ও হত্যাসহ ১০ মামলার আসামি লালমনিরহাটের বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা সাখওয়াত হোসেন সুমন খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতু টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সুমন লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা শহরের কালীবাড়ি মাস্টারপাড়া এলাকার মৃত বাচ্চু খানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, জমি দখল, হুন্ডি ব্যবসা, চোরাচালান, মাদককারবার, টেন্ডারবাজি, বৈধ আয়বর্হিভুত অর্থ ও সম্পদ অর্জনসহ অসংখ্য অভিযোগে প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে পুলিশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন সুমন খান। তার গ্রেপ্তারের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে তা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।
আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, সদর থানায় অর্থপাচারসহ তিনটি, ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ ছয়টি ও রংপুরের একটি হত্যা মামলায় পলাতক ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান। সোমবার রাতে কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এসএন পরিবহনের একটি স্লিপার নৈশ্যকোচে ঢাকা যাচ্ছিলেন সুমন খান।
এমন একটি গোপন সংবাদেরভিত্তিতে সদর থানার পুলিশ তিস্তা সড়ক সেতু টোল প্লাজায় বাসটি আটক করে। পরে বাসটিতে অভিযান চালিয়ে সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর রাতে সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার বাদি হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় সুমন খান, তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার রুমা (৪৩) ও কর্মচারী তৌকির আহমেদ মাসুমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনে মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুনওই মামলায় সিআইডি দাবি করে, সুমন খানের ব্যাংকে ২৩৭ কোটি ৪৯ লাখ ৪৮ হাজার ৭৬০ টাকা, তার স্ত্রী মোছা. নাহিদা আক্তার রুমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩১০ টাকার সন্ধান মেলে। সুমন খানের কর্মচারী লালমনিরহাট পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা হারুনের ছেলে তৌকির আহমেদ মাসুমের (৩৮) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮৬ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ১২৭ টাকা পাওয়া গেছে।
বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা, স্থানান্তর ও রুপান্তর করা হয়। সিআইডি’র এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানকে।
লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর জন্য আদালতে তাকে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। দেশের অন্যসব থানায় গ্রেপ্তারের বার্তা পাঠানো হবে। তারাও রিমান্ড চাইতে পারে।
মন্তব্য করুন