বিলুপ্তির পথে মৃৎশিল্প
বগুড়ার সোনাতলার বামুনিয়া পালপাড়ায় যাতায়াতের কোন রাস্তা নেই
সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সোনাতলার বালুয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া পালপাড়াবাসীদের সাথে রাস্তা নির্মাণ করে দিতে চেয়ে কেউ কথা রাখেনি। যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় দাদার পেশা পরিবর্তন করতে চায় ওই এলাকার ৩০ থেকে ৩৫ পরিবারের সদস্যরা। সরকারি অসহযোগিতা না পাওয়া, যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় ওই এলাকার মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণে বালুয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া গ্রাম। ওই গ্রামে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ পরিবার বসবাস করে। তাদের বাপ-দাদার পেশা ছিল মাটির তৈজষ পত্র তৈরী করা। বাপ-দাদার সেই পেশা আজও আঁকড়ে ধরে আছে তারা।
ওই গ্রামের কার্তিক পাল (৭৫) বলেন, তাদের পাড়ায় ৩৫ পরিবার বসবাস। যাদের প্রত্যেকেই মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা পান না তারা । এমনকি ব্যাংক থেকে দেওয়া হয় না কোন ঋণ সুবিধা। বামুনিয়া পালপাড়ায় মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিল, কাসা, ঢাকনা, দইয়ের সড়াই, স্যানেটারী রিং স্লাব, মাটির ব্যাংক, খেলনা সামগ্রীসহ হরেক রকমের জিনিসপত্র তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুনকল্যাণী রানী পাল (৮২) বলেন, জীবনের শেষ সময়ে এসে ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এক সময় খাল-বিল থেকে মাটি এমনি নিয়ে আসা যেত। এখন সেই মাটি কিনে নিয়ে আনতে হয়। এক ভ্যান মাটি ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। আর এক ট্রলি মাটি হাজার থেকে ১২শ’ টাকায় কিনতে হয়। এছাড়াও এক সময় বাঁশের পাতা দিয়ে এসকল মৃৎশিল্প পোড়ানো হতো। এখন বাঁশঝাড়ের মালিকরা সেই পাতা আনতে দেয় না। এখন কাঠ খড়ি দিয়ে মৃৎশিল্প পুড়তে হয়।
ওই গ্রামের গোবিন্দ পাল বলেন, তাদের গ্রামে আসা যাওয়ার জন্য কোন রাস্তা নেই। ভোট এলেই জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচিত হওয়ার পর কেউ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
মন্তব্য করুন