ভিডিও বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, যা বললেন দেশটির প্রেসিডেন্ট

পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, যা বললেন দেশটির প্রেসিডেন্ট, ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথগুলোর একটি পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ফের গ্রহণ করার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ হুমকি দিয়ে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন তিনি। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই পোস্ট দেওয়ার পর ট্রাম্পকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো।

রোববার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে আমেরিকা ফেস্ট নামের এক জনসভায় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ‘ভুল হাতে’ পড়েছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘এই জনসভায় উপস্থিতদের মধ্যে কেউ কি পানামা খালের নাম শুনেছেন? আমি নিশ্চিত যে বেশিরভাগই শোনেননি। কারণ, অন্যান্য সব জায়গার মতো এই খাল থেকেও আমাদের বিতাড়িত করা হয়েছে।’ 

উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত পানামা রাষ্ট্র। ৭৫ হাজার ৪১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশটিতেই অবস্থিত পানামা খাল, যা মিসরের সুয়েজ খালের পর বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচল উপযোগী বাণিজ্যপথ। প্রায় ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১১০ ফুট প্রশস্ত খালটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্ত করেছে। পানামা খাল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূল অভিমুখে যাত্রাকারী যেকোনো জাহাজকে দক্ষিণ আমেরিকার কেইপ হর্ন হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার (৮ হাজার নটিক্যাল মাইল) পথ অতিক্রম করতে হতো। এছাড়া উত্তর আমেরিকার এক দিকের উপকূল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দিকের উপকূলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও পানামা খালের কারণে ৬৫০০ কিলোমিটার কম পথ পাড়ি দিতে হয়। ১৯১৪ সালে খালটি খনন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং টানা বেশ কয়েক দশক নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখার পর ১৯৭৭ সালে খালটির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ পানামার সরকারের হাতে তুলে দেয় ওয়াশিংটন।  

অ্যারিজোনার সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ পানামা এবং তার জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল এবং সেটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বদান্যতা। কিছু শর্তে পানামার তৎকালীন সরকার রাজি হয়েছিল বলেই খালের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটির নিয়ন্ত্রণ পানামাকে প্রদানের আগে ওয়াশিংটন বলেছিল-যেসব শর্তের ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো যদি পূর্ণ না হয়, তাহলে খালের নিয়ন্ত্রণ ফের যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিরে আসবে।’ পরে ট্রুথ সোশ্যালে একটি ছবি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেই ছবিতে খালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পতাকার একটি ছবি রয়েছে। ছবির নিচে ট্রাম্প লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের খালে সবাইকে স্বাগতম।’

আরও পড়ুন

রোববার ট্রুথ সোশ্যালে এই পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি রেকর্ডকৃত বক্তব্য রিলিজ করে পানামার প্রেসিডেন্টের দপ্তর। সেই বক্তব্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো বলেন, ‘পানামা খাল এবং তার আশপাশের প্রতি ইঞ্চি জমির মালিক পানামা এবং এটিই বলবৎ থাকবে। এই ব্যাপারটি পানামার সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এ ইস্যুতে পানামা কখনও আপোস করবে না।’ পানমার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, চীন পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করছে বলে যে গুজব ছড়াচ্ছে, তা একেবারেই সত্য নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘উসকানি’ দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট। 

লাতিন আমেরিকার দেশ পানামার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। তবে গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাথে পানামার সাথে চীন নতুন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের আলোচনা শুরুর পরই পানামার সাথে সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে ভাবনা তৈরি হয়েছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রই এই খালটিকে সবচে বেশি ব্যবহার করে থাকে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দিনাজপুরে তাপমাত্রা ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পদত্যাগ করতে ট্রুডোকে নিজ দলের সংসদ সদস্যদের চাপ

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কদর কমেছে ডাকবাক্সের

ইজতেমা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ

বগুড়ায় ওলামা মাশায়েখ ও তাবলিগ সাথি ভাইদের বিক্ষোভ সমাবেশ

বগুড়ার শিবগঞ্জে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে কপি