পাকিস্তানের বিমান হামলা
আফগানিস্তানে নিহতরা সবাই ছিলেন পাকিস্তানি শরণার্থী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের আকস্মিক বিমান হামলায় আফগানিস্তানের পাকতিকায় নিহতদের সবাই পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ওয়াজিরিস্তান থেকে আগত শরণার্থী ছিলেন। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খারাজমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় জানিয়েছেন এ তথ্য।বার্তায় তিনি আরও জানিয়েছেন এই হামসলার ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার।
এক্স বার্তায় এনায়েতুল্লাহ খারাজমি বলেন, “নিহতদের সবাই বেসামরিক এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে। এরা সবাই ওয়াজিরিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে এখানে এসেছিলেন।” বার্তায় তিনি আরও বলেন, “দেশের ভূমি এবং সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার বৈধ অধিকারের বলেই সরকার এই হামলার জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”মঙ্গলবার রাতে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাকতিকার বারমাল জেলায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। দফায় দফায় সংঘটিত এ হামলায় নিহত হয়েছেন নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৫ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খামা প্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, বারমাল জেলার লামানসহ সাতটি গ্রামকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। হামলায় মুর্গ বাজার নামের একটি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বাকি গ্রামগুলোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী অবশ্য এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেনি, তবে দেশটির সামরিক বাহিনীর একটি সূত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছে, যে সীমান্ত এলাকায় তালেবান ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছিল।
আরও পড়ুনগত বেশ কয়েক বছর ধরে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে তালেবানাগোষ্ঠীর পাকিস্তান শাখা তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) তৎপরতা বাড়ছে। পাকিস্তানের সরকার কয়েক বছর নিষিদ্ধ করেছে টিটিপিকে। ওয়াজিরিস্তান টিটিপির একটি শক্তিশালী ঘাঁটি অঞ্চল।
টিটিপিকে দমনে খাইবার পাখতুনখোয়ায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। সেই অভিযান থেকে বাঁচতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আফগানিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক পাকিস্তানি নাগরিক। আফগানিস্তানের তালেবান সরকারও এই শরণার্থীদের বসবাসের অনুমতি দিয়েছে।পাকিস্তানের অভিযোগ, তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর টিটিপি ও সমমনা গোষ্ঠীগুলোর ‘স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে আফগানিস্তান। নিষিদ্ধ টিটিপিকে বিভিন্নভাবে তালেবান সরকার সহযোগিতা ও সহায়তা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। টিটিপিকে দমনে একাধিকবার কাবুলকে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামাবাদ।
আফগানিস্তান অবশ্য বরাবরই টিটিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তবে একই সঙ্গে টিটিপিকে দমনে যৌথ অভিযানের প্রস্তাবেও অনীহা জানিয়েছে তালেবান সরকার। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী এ দু’টি দেশের মধ্যকার উত্তেজনা ক্রমশঃ বাড়ছে।
মন্তব্য করুন