ট্রেনের বগি বাড়ানোর দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি
৪৯২ লোকাল ট্রেনে গাদাগাদি আর বাদুড়ঝোলা দৃশ্য নিত্যদিনের
সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার বোনারপাড়া থেকে সান্তাহার রুটে চলাচল করা ৪৯২নং লোকাল ট্রেনের বগি বাড়ানোর দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে কয়েকটি বগি নিয়ে চলাচল করছে ট্রেনটি। ওই ট্রেনের যাত্রীরা গাদাগাদি ও বাদুর ঝোলা অবস্থায় যাতায়াত করছেন। ফলে যেকোন সময় ট্রেন থেকে পড়ে যাত্রীদের প্রাণহানী ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রতিদিন ট্রেনটি বোনারপাড়া স্টেশন থেকে সকাল ৭.২০ মিনিটে সান্তাহারের উদ্দেশ্য ছেড়ে আসে। এরপর ট্রেনটি মহিমাগঞ্জ ও শালমারা অতিক্রম করে সোনাতলা স্টেশনে পৌছলে যাত্রীতে ভড়ে যায়। এরপর ভেলুরপাড়া, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ ও সুখানপুকুর স্টেশনে যাত্রী উঠার কোন জায়গা থাকে না।
ফলে শ্রমজীবী মানুষগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে কিংবা ইঞ্জিনে বাদুর ঝোলার মতো উঠে পড়েন। এছাড়াও ট্রেনের প্রতিটি বগির দরজায় হাতল ধরে স্টেশনের পর স্টেশন পার হয়ে গন্তব্যে আসতে হয় তাদের। এ দৃশ্য বগুড়া স্টেশনে পৌছার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন চোখে পড়ে। আজ রোববার (৫ জানুয়ারি) সরজমিনে উপজেলার সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশনে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি এলে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ধাক্কাধাক্কি ও গাদাগাদি করে উঠতে হয় ট্রেনে।
ভেলুরপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী বিটুল বলেন, ব্যবসায়ীক কাজে প্রায়ই ট্রেনে করে বগুড়া জেলা শহরে যেতে হয়। যতক্ষণ ট্রেনের মধ্যে অবস্থান করি, তখন মনে হয় কখন যেন যাত্রীদের ঠেলাঠেলি আর ভিড়ে জীবন প্রদীপ নিভে যায়।
তেকানী এলাকার রিকশাচালক তুহিন মিয়া ও অটোচালক বিল্লাল মিয়া বলেন, জীবিকার তাগিদে সকালে অসংখ্য মানুষ গাদাগাদি করে ওই ট্রেনে জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। ট্রেনের যাত্রীর তুলনায় প্রতিদিন বগির সংখ্যা থাকে সীমিত। দীর্ঘদিন যাবত এই অঞ্চলের যাত্রীরা লোকাল ওই ট্রেনের বগি বাড়ানোর জন্য রেল বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেও কোন ফল পাননি।
আরও পড়ুনএছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটে ১০টি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্টেশনগুলো হলো-সোনাতলার ভেলুরপাড়া, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন, গাইবান্ধার শালমারা, ত্রিমোহনী, কুপতলা, নলডাঙ্গা, হাছানগঞ্জ, রংপুরে চৌধুরানী, অন্নদাননগর, মহেন্দ্রনগর এবং বগুড়ার পাঁচপীর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম বলেন, জনবলের অভাবে সান্তাহার-লালমনিহাট রেল রুটে ১০টি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এসব স্টেশনে কোন জনবল নেই, নেই টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা।
স্টেশন মাষ্টারের কক্ষ, বিশ্রামাগার সব সবকিছু তালাবদ্ধ রয়েছে। এসব স্টেশনে আপন গতিতে ট্রেন এসে দাঁড়ায়। যাত্রী নামার পর স্টেশন ছেড়েও যায় আপন গতিতে। তাই রেল বিভাগ এই রুটে ট্রেনের বগি বৃদ্ধি করতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ট্রেনের বগির সংকট রয়েছে।
মন্তব্য করুন