যারা রক্ত দিয়েছে জীবন দিয়েছে তাদের স্বীকৃতি থাকা উচিত : পঞ্চগড়ে সারজিস আলম

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, আমরা যেখানেই গিয়েছি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বার বার বলেছি। এই যে এতবড় একটা অভ্যুত্থান তার একটা লিখিত স্বীকৃতি থাকা উচিত। যারা রক্ত দিয়েছে জীবন দিয়েছে তাদের একটা স্বীকৃতি প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা গত বৃহস্পতিবার সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ডেকেছিলেন। তাদের সমন্বয়ে আমরা মনে করি একটি ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে।
যার ফলে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি যারা ছিলেন এই বিষয়ে সম্মত হয়েছেন যে, অবশ্যই একটি ঘোষণাপত্র থাকা উচিত। আমরা বিশ্বাস করি খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসবে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শেষে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি এতো বড় অভ্যুত্থান, এতো রক্ত, এতো জীবন সকল কিছুর যে চাওয়া তা কেবল একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবন্ধ না। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হয়ে জনগণের যারা প্রতিনিধি হবে স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের কাছে ক্ষমতা যাবে এতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ৬ মাসের মধ্যে নতুন একটি ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করা, বিচার ব্যবস্থা ঠিক করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের মূল দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যেমন বলেছিলেন ছাব্বিশের মাঝামাঝির পূর্বেই সেটা হোক কিংবা তার দু’এক মাস আগে হোক, এছাড়া পঁচিশের ডিসেম্বর কিংবা ছাব্বিশের জানুয়ারির কথাও এসেছে। যেটি যৌক্তিক তাতে আমরা দ্বিমত করবো না। কিন্তু যদি বলা হয় এ বছরের জুন, সেটি অযৌক্তিক। একটা স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন।
আরও পড়ুনসংস্কার হওয়ার পরপরই যদি আমরা নির্বাচনের দিকে যাই তাহলে জনগণের আশা আকাঙ্খা পূরণ হবে বলে আমরা মনে করি। যারা সংস্কার নিয়ে কাজ করছে তারা সংস্কার নিয়ে কাজ করবে এবং যারা নির্বাচন নিয়ে কাজ করছে তারা তাদের কাজ এগিয়ে নেবে। স্বচ্ছ একটা নির্বাচনের জন্য যতটুকু সময় দরকার সেই সময় টুকু দিতে হবে। আগামী ৬ মাস কোন যৌক্তিক সময় হতে পারে না।
সারজিস বলেন, বিগত ১৬ বছরে রংপুর বিভাগসহ পঞ্চগড় অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। কয়েকটি রাস্তা ছাড়া কিছুই হয়নি। একটা শিল্প কারখানা হয়নি। আমাদের বেশি কিছু দরকার নেই। যেটুকু পঞ্চগড়ের মানুষের পাওনা বা হক সেটা কিভাবে আদায় করা যায় আমরা প্রাণপন চেষ্টা করবো। একই সাথে তিনি বলেছেন, অন্যায় অনিয়ম ঠেকাতে প্রত্যেক জেলা উপজেলার মানুষকে নিয়ে গ্রুপ তৈরি করা হবে এ সময় তিনি পঞ্চগড় পৌরসভার প্রায় দুই হাজার মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন।
এ সময় পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. আদম সুফি, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ও জেলা জজ আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিজার (জিপি) আব্দুল বারী, এড. খলিল হোসেন, গড়িনাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দিপুসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন