কৃত্রিম সার সংকট তৈরির অভিযোগ
নওগাঁয় ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
নওগাঁ প্রতিনিধি : উত্তরের সীমান্তবর্তী কৃষি নির্ভর জেলা নওগাঁর মাঠে-মাঠে এখন চলছে বোরো ধানের চারা রোপণের উৎসব। জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন ও রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বোরো মৌসুমের শুরুতেই সারের সংকট তৈরির অভিযোগ উঠেছে।
কৃষকরা জানান, সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সারের বস্তাপ্রতি আড়াইশ’ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। তবে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস কৃষি বিভাগের। সূত্র মতে, উপজেলাভিত্তিক বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ও রোপণের পরিমাণ হচ্ছে- নওগাঁ সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১৯হাজার ৩৬৫ হেক্টর, রোপণ হয়েছে ১০ হাজার ১শ’ হেক্টর।
রাণীনগর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৮৪০ হেক্টর রোপণ হয়েছে ১৩ হাজার ৪৫৫ হেক্টর। আত্রাই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৭৯০ হেক্টর, রোপণ হয়েছে ১৬ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। বদলগাছি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৭৪০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ১ হাজার ৫৪০ হেক্টর। মহাদেবপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৪১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ৩ হাজার ৬৬০ হেক্টর। পত্নীতলা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার ৭শ’ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ১৮শ’ হেক্টর।
ধামইরহাট উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৭২৫ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ২ হাজার ৬২৫ হেক্টর। সাপাহার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ২১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ২ হাজার ৫৯০ হেক্টর। পোরশা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ১১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর। মান্দা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ১১০ হেক্টর। রোপণ হয়েছে ৪ হাজার ৫২০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার ৯৯৫ হেক্টর। এ জেলায় কৃষকরা মূলতঃ জিরাশাইল, ব্রিধান-২৮, ব্রিধান-২৯, ব্রিধান- ৮১, ব্রিধান-৮৯, ব্রিধান- ৯২ এবং কাটারীভোগ চাষ করে থাকেন।
আরও পড়ুনবরেন্দ্র এলাকার মাঠ জুড়ে ধান রোপণে ব্যস্ত কৃষক। রোপণের শুরুতেই জমিতে সার প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে সার কিনতে গিয়ে নাজেহাল চাষিরা। তাদের অভিযোগ সরবরাহ কমার অজুহাতে সব ধরনের সারের বস্তাপ্রতি আড়াইশ’ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও ডিলাররা। এতে বেড়ে গেছে খরচ। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এসব জমি চাষাবাদে সারের প্রয়োজন ৭৫ হাজার ৪শ’ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে মাসিক অনুপাতে ডিলার পর্যায়ে এসব সার সরবরাহ করা হয়েছে।
সরকার প্রতিকেজি এমওপি সারের দাম ২০ টাকা, ইউরিয়া ২৭ টাকা এবং টিএসপির ২৭ টাকা বেঁধে দিয়েছে। জেলার মাঠ পর্যায়ে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। সারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ২০৭ জন ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) ১২৭ জন নিবন্ধিত ডিলার নওগাঁয় সার সরবরাহের কাজ করছেন। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত জেলায় ৭৬ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সারের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নওগাঁর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকার নির্ধারিত দামেই বাজারে সার বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই গ্রহণ করবো।
মন্তব্য করুন