শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডিতরা খালাস, ঈশ্বরদীতে আনন্দ র্যালি
পাবনা ও ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : ১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত বিএনপি নেতাকর্মী খালাস পাওয়ায় আনন্দ র্যালি হয়েছে।
আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিতদের খালাসের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে জড়ো হতে থাকে। পরে সেখান থেকে একটি আনন্দ র্যালি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেম্পু স্ট্যান্ডে এসে পথসভায় মিলিত হয়।
খালাসের রায়কে সাধুবাদ জানিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এসএম ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ ৪৭ জন নেতাকর্মী ৬ বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি ছিলেন। তারা সেই মিথ্যা মামলায় খালাস পাওয়ায় আমরা উচ্ছসিত। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার এই ৪৭ জন নেতাকর্মীকে কারাগারে আটকে রেখে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া উপজেলার মাটি থেকে বিএনপিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। ভবিষ্যতেও কোনো স্বৈরাচারী বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে ট্রেনে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢোকার সময় ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলার অভিযোগে ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা করেন।
আরও পড়ুনতৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের পরের বছর পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র জমা দেয়। কিন্তু আদালত সে অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটির পুনঃতদন্ত হয়।
১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল পুলিশ ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ ৫২ জনের নামে আদালতে আবার অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই এই মামলায় পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রুস্তম আলী রায় দেন। রায়ে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৯ জনকে মৃত্যুদন্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন