সংস্কার হচ্ছে বগুড়া সুইমিংপুল : বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২৫ লাখ টাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার : জানালার কাঠ আর চৌকাঠে ঘুণ ধরেছে। চারিদিক নিস্তব্ধ। ভিতরের দেয়ালের পলেস্তার খুলে গেছে। দেয়ালগুলোতে ঝুল জমেছে। উধাও হয়ে গেছে বাথরুমের দরজার অর্ধেক। গোসলখানাগুলো কোন এক সময় সচল ছিল এমন চিহ্ন নেই কোনখানে।
যেদিকে তাকাবেন শুধু ভুতুড়ে পরিবেশ। মনে হতে পারে এটি কোন ভুতুরে বাড়ি। অথচ এটি বগুড়া জেলা সুইমিং পুল কমপ্লেক্স। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটছে সুইমিংপুল কমপ্লেক্সেটির। সম্প্রতি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে সুইমিং পুল সংস্কারের জন্য। অচিরেই এই স্ইুমিং পুল সংস্কার করে চালু করা হবে এই আশায় রয়েছেন বগুড়ার সাঁতারুরা।
বগুড়ার সাঁতারকে এগিয়ে নিতে ২০০২ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক মানের পুলটি নির্মাণ করে। নির্মাণের পর থেকেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এর জন্য আর কোন অর্থ বরাদ্দ না করায় সুইমিং পুলটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মানসম্পন্ন এই পুলে ২০০৪ সালে জাতীয় সুইমিং পুলের অধীনে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন প্রায় ৫শ’ প্রতিযোগী। এরপর প্রায় ২০ বছরে আর কোন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হয়নি।
এরপর কয়েক বছর শুধু সাঁতার প্রশিক্ষণের সঙ্গে জড়িত প্রশিক্ষকরা সাঁতার শিখতে ইচ্ছুক ছেলে-মেয়েদের সাঁতার শেখার কাজটি করে গেছেন। বর্তমানে তাও বন্ধ হয়ে আছে। গত কয়েক বছর পুলের গেটের তালাও খোলা হয়নি। এছাড়া সমস্যায় জর্জরিত ৮ লেনবিশিষ্ট ও ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই সুইমিং পুলে কোন ফিল্টার মেশিন ও সাকার মেশিন না থাকায় দু’দিন ব্যবহার করলেই পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনআওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম ও জেলা সুইমিংপুল পরিদর্শন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. শেখ মোহাম্মাদ জোবায়েদ হোসেন। এর পরপরই এই সুইমিং পুল সংস্কারের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়।
২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ অপ্রতুল বলে মনে করছেন সংস্লিষ্টরা। কারণ বর্তমানে সুইমিং পুলের বিদ্যুৎবিল বকেয়া আছে ৯ লাখ টাকার ওপর। সংস্কার করার পর বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হলে বকেয়াও পরিশোধ করতে হবে। ফলে আরও বরাদ্দ প্রয়োজন। সেই সাথে ফিল্টার প্রয়োজন। ফিল্টার না হলে সুইমিং পুল চালু করেও কোন লাভ হবে না। কারণ এই পুলের পানি দু’দিনের বেশি রাখা যায় না। আর একবার পানি তুলতে এবং ছাড়তে দুই দিনের বিশে সময় লাগে। বিদ্যুৎবিলও আসে বেশি। একারণে অভিজ্ঞ সাঁতারুরা ফিল্টারসহ পুল চালু করার আহবান জানান।
এ ব্যাপারে বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, বগুড়ার সুইমিংপুল ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে আছে বিষয়টি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবের সাথে আলোচনা করার পর যুগ্ম সচিব ড. শেখ মোহাম্মাদ জোবায়েদ হোসেন সুইমিংপুল পরিদর্শন করেন। এর পর ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অচিরেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।
মন্তব্য করুন