ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি : আইএইএ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ডিসেম্বরে ইউরেনিয়াম মজুতে নাটকীয় গতি বাড়ানোর ঘোষণার পর থেকে ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত প্রায় পারমাণবিক বোমা তৈরির মানের কাছাকাছি পৌঁছেছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) দুটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক বোমার মানের প্রায় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি, ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ফিসাইল বিশুদ্ধতায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত পশ্চিমা শক্তিগুলোর জন্য দীর্ঘদিনের উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমালোচকদের বক্তব্য, এতো উচ্চ স্তরে ইউরেনিয়াম মজুত করার কোনো বেসামরিক যৌক্তিকতা নেই। যদিও ইরান বলছে, তারা শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ পরমাণু শক্তি চায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে, ইরানের কর্মকাণ্ডের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য কূটনীতির সময় ফুরিয়ে আসছে।
সদস্য দেশগুলোর কাছে আইএইএ’র পাঠানো দুটি ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ উপাদানের মজুত প্রায় অর্ধেকে উন্নীত হলেও অঘোষিত স্থানে প্রাপ্ত ইউরেনিয়ামের ব্যাখ্যাবিহীন উপস্থিতিসহ ইরানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলা সমস্যা সমাধানে বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি। আইএইএ এক অনুচ্ছেদে বলেছে, পরমাণু অস্ত্রবিহীন একমাত্র দেশ ইরান উচ্চমানে পরিশোধিত ইউরেনিয়ামের উৎপাদন ও সঞ্চয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে; যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই অনুচ্ছেদটি অস্বাভাবিক ভাবে দুটি প্রতিবেদনেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আইএইএ’র দুটি গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন মাসে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড আকারে পরিশোধিত ইউরেনিয়ামের মজুত ৯২ দশমিক ৫ কিলোগ্রাম থেকে বেড়ে ২৭৪ দশমিক ৮ কিলোগ্রামে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুনএদিকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের একদিন পর মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রত্যাখানের বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। তেহরানে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পারমাণবিক ইস্যুতে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মাঝে সরাসরি আলোচনার কোনো সম্ভাবনা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত চাপপ্রয়োগের মার্কিন নীতি বাতিল করা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো আলোচনা হবে না। তিনি বলেন, পারমাণবিক আলোচনার বিষয়ে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা চাপ, হুমকি বা নিষেধাজ্ঞার আওতায় কোনো আলোচনা করব না।
মন্তব্য করুন