নওগাঁর রাণীনগরে মানব পাচারের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে ১ লাখ টাকা বেতনের প্রলোভন দিয়ে সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নয়ন নামে এক যুবককে সৌদি আরবে পাচারের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর নামে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নয়নের বাবা আলাউদ্দিন সরদার। গত ২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আসামিরা যোগসাজসে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার পর ছেলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হওয়ায় ছেলের খবর পাওয়ার জন্য আসামিদের দ্বারস্থ হয়।
তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আরো ২ লাখ টাকা দাবি করে আলাউদ্দিনের কাছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ছেলেকে উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আলাউদ্দিন বাদি হয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে নওগাঁ মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আলাউদ্দিন (৪৫) এর ছেলে নয়ন সরদারকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য একই গ্রামের ইব্রাহীম মন্ডলের ছেলে আসামি সানোয়ার মন্ডল (৪২) ও তার স্ত্রী সুরমা বানু (৩৫) যোগসাজসে নানা ধরণের প্রলোভন দিয়ে মাসে ১ লাখ টাকা বেতন পাবে এমন রসালো গল্প শুনিয়ে আসামিরা আলাউদ্দিনের কাছ থেকে তার ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর নাম করে দুই দফায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এই টাকা পরিশোধ করতে আসামি সানোয়ার তার বসতবাড়ি বন্ধক রেখে টাকা নেওয়ার ব্যবস্থা করে। টাকা পারিশোধ করতে বাদি তার বসতবাড়ি বন্ধক রাখে। এক পর্যায়ে আসামিরা আলাউদ্দিনেরর ছেলে নয়নকে বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করলে গত ২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে পাঠিয়ে দিলে সেখানে অবস্থানরত আসামির লোকজন নয়নের কাছ থেকে পাসপোর্ট ভিসার সমস্ত কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে একটি অন্ধকার ঘরে আটক রাখে।
আরও পড়ুনহঠাৎ করে ২৮ জানুয়ারি বাদির মোবাইলে তার ছেলে নয়ন কান্না বিজড়িত কণ্ঠে ফোন করে বলেন, আমাকে আটকে রেখে দফায় দফায় মারপিট করা হচ্ছে। পাসপোর্টসহ সমস্ত কাগজপত্র আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আরো ২ লাখ টাকা না দিলে অন্যত্র পাচার করে দেওয়া হবে। এমন কথা শোনার পর নয়নের বাবা আলাউদ্দিন বাদি হয়ে সানোয়ার মন্ডল ও তার স্ত্রী সুরমা বানুকে আসামি করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে মামলা করা হয়।
বিজ্ঞ আদালত প্রয়োজনীয় তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নওগাঁকে নির্দেশ দেন। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার ইনস্পেক্টর তারেকুল সরকার জানান, কোটের নির্দেশ মোতাবেক এই মামলা তদন্ত করার জন্য আমি ঘটনাস্থলে গেছিলাম। তদন্ত কাজ অব্যাহত আছে।
মন্তব্য করুন