ভিডিও বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

বগুড়ার শাজাহানপুরে আলুর বাম্পার ফলনেও কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

বগুড়ার শাজাহানপুরে আলুর বাম্পার ফলনেও কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : এ বছর অনুকূল আবহাওয়া এবং চাষ বাড়ায় বগুড়ার শাজাহানপুরে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে দরপতনে কৃষকের কপালে ফুটে উঠেছে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ। ক্ষতি থেকে বাঁচতে সরকারের কাছে আলু রপ্তানির দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর উপজেলায় ৬ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূল ও রোগবালাই কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার উপজেলায় আলুর মোট উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিকটন। এর মধ্যে স্থানীয় জাতের পাকরি ও হাগড়াই আলুর উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার মেট্রিকটন।

আর উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু ডায়মন্ড, এ্যাস্ট্রিক, কার্ডিনাল, এলভেরিয়া ইত্যাদি উফশী জাতের আলুর উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিকটন। আলুর উৎপাদন বাড়ার সাথে এ উপজেলায় বেড়েছে হিমাগারের সংখ্যাও। আগের চারটি এবং চলতি মৌসুমে সদ্য স্থাপিত তিনটিসহ হিমাগারের সংখ্যা এখন সাতটি। এসব হিমাগারের মোট ধারণ ক্ষমতা ৫৩ হাজার ৪৬৬ মেট্রিকটন।

এক্ষেত্রে হিমাগার পরিপূর্ণ হওয়ার পরও কৃষকের বাড়িতে থেকে যাচ্ছে প্রায় ৭৭ হাজার মেট্রিকটন আলু। অপরদিকে মৌসুমের শুরুতে আলুর পাইকারি বাজার দর প্রতি কেজি ১৫-১৮ টাকা থাকলেও বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ১২-১৩ টাকা। আলুর দরপতনে বিপুল পরিমাণ আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে কৃষকের বাড়িতে থাকা বিপুল পরিমাণ আলু হিট ইঞ্জুরিতে আক্রান্ত হয়ে পঁচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এমতাবস্থায় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে দেশের বাইরে আলু রপ্তানির দাবি জানিয়েছেন আলু চাষিরা। শুধু কৃষকের বাড়িতে নয়, হিমাগারে রাখতে গিয়েও দিনের পর দিন সড়কে আলুবোঝাই ট্রাকের লম্বা লাইন দেখা গেছে। সেখানেও হিট ইঞ্জুরির আশঙ্কা দেখা দেয়।

আরও পড়ুন

হিমাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ১ মার্চ থেকে প্রতিটি হিমাগারে আলু লোড হওয়া শুরু হয়। ইতোমধ্যে আশরাফী কোল্ড স্টোর, আফরিন কোল্ড স্টোর, টিএমএসএস কোল্ড স্টোর, ফাতেমা ছাইদুর কোল্ড স্টোর, ও কৃষি কল হিমাগারসহ পাঁচটি হিমাগারে আলু লোড করা সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে সদ্য স্থাপিত মঞ্জুর কোল্ড স্টোর এন্ড এগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সুজাবাদ মন্ডল কোল্ড স্টোরেজে আলু বুকিং সম্পন্ন হলেও হিমাগারের চেম্বারে লোড করতে আরও ২-১ দিন লাগবে।

উপজেলার খরনা ইউনিয়নের হরিণগাড়ি গ্রামের আলু চাষি দেলোয়ার হোসেন দুদু জানান, এবছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে এ্যাস্ট্রিক জাতের আলু চাষ করেছিলেন। প্রতি বিঘা জমিতে ফলন পেয়েছেন প্রায় ৪ মেট্রিকটন। তিনি ১২ টাকা কেজি দরে বাকিতে আলু বিক্রি করেছেন। এখনও টাকা হাতে পাননি। তাতে প্রতি বিঘার জমির আলু বেচে তিনি পাবেন ৪৬ হাজার টাকা। অথচ বীজ, সার-কীটনাশক, সেচ, শ্রমিক মজুরি বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

আশরাফী কোল্ড স্টোরের ম্যানেজার অজিত কুন্ডু জানান, এ বছর প্রচুর পরিমাণে আলু উৎপাদন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় এবার ব্যবসায়ীদের চেয়ে কৃষকরাই বেশি পরিমাণ আলু হিমাগারে রেখেছেন। তারপরও কৃষকের বাড়িতে যে আলু রয়েছে তাতে আগামী জুলাই পর্যন্ত বাজারের চাহিদা মিটবে। জুলাইয়ের শেষ দিকে স্টোর থেকে আলু বের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ অন্যান্য বছর মে মাস থেকেই স্টোর থেকে আলু বের হতো।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে সফলভাবে স্থাপিত হলো টারবাইন

গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সরকার ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়- সাবেক এমপি কাজী রফিক

জামায়াতের পক্ষ থেকে অর্থ সহযোগিতা পাচ্ছেন নৌকাডুবিতে বাবা-মা হারানো ছোট্ট দিপু

বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে গণহত্যা দিবস পালন

বগুড়ার ধুনটে ২ ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণের পরিকল্পনাকারী পুলিশ গ্রেফতার

বগুড়ায় ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু : প্রথম দিন দীর্ঘ লাইন