দিনাজপুরের কাহারোলে লিচুবাগানগুলোতে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স মৌ-মাছির গুণগুণ শব্দে মুখরিত এলাকা

কাহারোল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : কাহারোলে লিচুর বাগানে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স, মৌমাছির গুণগুণ শব্দে ওই এলাকাগুলো মুখরিত। দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলায় এ মৌসুমে লিচুর বাগানের গাছগুলোতে এবার মুকুলে ভরে গেছে। তাই মুকুলের সমারোহে লিচু বাগানগুলোতে গতবারের চেয়ে বেড়ে গেছে মৌমাছিদের আনাগোনা।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় অত্র উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ ও মুকুন্দপুর গ্রামের লিচুর বাগান গুলোতে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স বসিয়েছেন মৌ-খামারিরা। উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় ২ শত ৫০ জন লিচু বাগানের মালিক রয়েছে এবং লিচুর বাগানের সংখ্যাও ২ শত ৫০ টি। উপজেলায় ১ শত ৪০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান অবস্থিত। স্থানীয় উদ্যোক্তারাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মৌ-খামারিরা এই উপজেলায় এসে ভিড় জমাতে দেখা যাাচ্ছে।
এর ফলে উদ্যোক্তা ও মৌ-খামারিরা এ মৌসুমে ৫০ মেট্রিক টন মধু আহরণের পাশাপাশি মৌ-মাছি পরাগায়নের মাধ্যমে ৩০ ভাগ বেশি লিচু উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ধান চাষাবাদের উপজেলা কাহারোলেও লিচু বাগানগুলোতে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স শোভা পাচ্ছে। মৌ-মাছির গুঞ্জন আর মৌ-খামারিদের কর্ম-ব্যস্ততায় এখন মুখরিত এ অঞ্চলের লিচু বাগানগুলো।
মৌ-মাছি লিচুর মুকুলের মধু নিপুণভাবে আহরণের পর বাক্সে ফিরছে, আবার বাক্সে মধু জমা রেখে মধু আহরণে ছুটছেও তারা। উত্তরাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামে লিচুর বাগানে মৌ-খামার বসিয়েছেন আবুল কালাম নামে এক মৌ-খামারি। অন্য আরেকজন মৌ-খামারি মো: হাসনাত আলী ও তার লোকজন তাদের দলে রয়েছে ৮-১০ জন লোক। মৌ-খামারী মো: হাসনাত আলী জানান, তারা এবার ৪ টি জায়গায় ৬ শতাধিক মৌ-বক্স বসিয়েছেন। মধু সংগ্রহের জন্য ইতিমধ্যে ৫ টন মধু সংগ্রহ করেছেন।
আরও পড়ুনশুধু মো: হাসনাত আলী নয় কর্ম ব্যস্ত উদ্যোক্তা ও মৌ-খামারিরাও। ইতোমধ্যে প্রচুর মধু উৎপাদন করেছেন, বাকি সময়েও অনেক মধু আহরণের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তারা। উপজেলায় এ মৌসুমে ৩০ জনের অধিক মৌ-খামারি ও উদ্যোক্তা মধু আহরণে নেমেছে। তারা বেশির ভাগ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে। দক্ষ মৌ-খামারিরা মধু আহরণের কাজ করছেন।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, অত্র উপজেলায় মাদ্রাজী, বেদানা, বোম্বাই, চায়না-৩, কাঠালিয়া সহ বিভিন্ন জাতের লিচুর উৎপাদন হয়ে থাকে এই উপজেলায়। বেদনা লিচু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এই সু-স্বাদু লিচুর খ্যাতি রয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
তিনি আরও জানান, বাগানে মধু আহরণে মৌ-মাছি পরাগায়নের মাধ্যমে লিচুর ফলন কমপক্ষে আরও ৩০ ভাগ বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে। লিচুর বাগানে মধু উৎপাদনে মৌ-খামারি ও লিচুর খামার মালিকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে আমাদের কৃষি বিভাগ।
মন্তব্য করুন