ভিডিও বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫

ঈদ ঘিরে বগুড়ায় শতকোটি টাকার দই বিক্রি

ঈদ ঘিরে বগুড়ায় শতকোটি টাকার দই বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টার : দইয়ের জেলা বগুড়া। এখানকার দইয়ের খ্যাতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশজুড়েও। শুধু দই-ই এ জেলাকে দিয়েছে ভিন্ন পরিচয়। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় বগুড়ার দইয়ের জনপ্রিয়তা যুগ যুগ ধরে অটুট। ২০২৩ সালের ২৬ জুন ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পাওয়া শতবর্ষের ঐতিহ্য আর খাঁটি দুধের মিশেল তৈরি বগুড়ার দই ছাপিয়ে গেছে তার ঐতিহ্যকেও।

এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে বগুড়ায় বিপুল পরিমাণ দই বিক্রি হয়েছে। এবার ঈদ আনন্দের সাথে একটানা নয়দিনের ছুটি থাকায়-বিয়ে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঈদ পুনর্মিলনী, সুন্নতে খৎনা, জন্মদিনের মত নানা ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে যেকোন বছরের তুলনায় বেশি। এছাড়াও পর্যটকরাও ভিড় বাড়িয়েছেন দইয়ের দোকানগুলোতে।

সব মিলে এবার ঈদ ঘিরে বগুড়ায় প্রায় শতকোটি টাকার দই-মিষ্টি বেচাকেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু বগুড়ার ক্রেতারাই নন এ জেলায় যারা বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছেন তারাও তাদের পরিচিতজনের জন্য দই কিনে নিয়ে গেছেন। এছাড়া আত্মীয়তার বন্ধন আরও গভীর করতে একে অপরের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন বগুড়ার দই-মিষ্টি। অনেকে উপহারও হিসেবেও পাঠাচ্ছেন দই।

বগুড়ার ১২টি উপজেলায় রয়েছে সহস্রাধিক দইয়ের দোকান। বগুড়া শহর এর আশেপাশে রয়েছে তিন শতাধিক দোকান। বিগত কয়েক বছরে গ্রাম-গঞ্জেও গড়ে উঠেছে দইয়ের কারখানা। বগুড়ার এসব দইয়ের রয়েছে আবার বাহারি নাম ও দাম। বগুড়ায় বিভিন্ন মানের, আকারের ও নামের দই বিক্রি হয়। এসব দই ঈদে ৭শ’ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আবার সাদা বা টক দইয়েরও রয়েছে আলাদা সুখ্যাতি। সারা বছর যে দামে দই বিক্রি হয় ঈদ মৌসুমে তার চেয়ে অনেক বেশি দামেই দই কিনতে হয় ক্রেতাদের। তাদের অভিযোগ, দুধের দাম বেশি বা পাওয়া যাচ্ছে না অজুহাতে দ্বিগুণ বা তার বেশি দামে ঈদের সময় দই বিক্রি করেন বিক্রেতারা।

আরও পড়ুন

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ ঘিরে দইয়ের চাহিদা প্রচুর। বেচাকেনা ভালো হয়েছে। বগুড়ার দই যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। বিগত যেকোন বছরের তুলনায় এবার দই-মিষ্টি বিক্রি বেশি। এবারের ঈদে বগুড়ায় যে পরিমাণ দই উৎপাদন ও বিক্রি হয়েছে তাতে শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

তবে বগুড়ার দইয়ের স্বাদ, গুণগত মান, ঘনত্ব ও সঠিক ওজন আগের মতো নেই বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তারা বলছেন, ঈদে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে অতিলাভের আশায় বগুড়ার দইয়ে সুনাম নষ্ট করছেন। এসব অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গাভীর তরল খাঁটি দুধের পরিবর্তে গুঁড়া দুধ, স্টার্চ ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানে দই তৈরি করছেন। ক্রেতারা আসল ও নকল দইয়ের পার্থক্য করতে না পাড়ায় ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী বগুড়ার দইয়ের সুনাম ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে বগুড়ার দইয়ের জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার পরেও উপযুক্তভাবে প্রক্রিয়াকরণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠানোর ব্যবস্থা না থাকা এবং সনাতনি পদ্ধতিতে উৎপাদনের কারণে আজও পণ্যটি রপ্তানির দুয়ার খোলা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দই পরিবহনের জন্য বগুড়ায় বিমানবন্দর ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) সুবিধা থাকা আবশ্যক। তখন প্রক্রিয়াকরণ করে দ্রুত দেশের বাইরে পাঠানো সম্ভব হবে। বিমানবন্দর ও ইপিজেড সুবিধা থাকলে বিশ্ববাজারে বগুড়ার দই একটা ভালো অবস্থান তৈরির পাশাপাশি অনেক কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ায় পুলিশের উপর হামলা, এটিএসআই ও কনস্টেবল আহত

বগুড়ার গাবতলীর রামেশ্বরপুরে নিম্নমানের সামগ্রী গিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ফেনসিডিলসহ দুই ভাই গ্রেফতার

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে চুরি যাওয়া শাড়িসহ গ্রেফতার ৪

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের হত্যা মামলার আসামি সুনামগঞ্জে গ্রেফতার

সাবেক এমপি মোরশেদ আলম গ্রেফতার