সোনার গহনা ফিরিয়ে দেওয়ায় খোকনকে সংবর্ধনা

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : গাড়িতে ফেলে যাওয়া প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের সোনার গহনা এবং টাকা প্রকৃত মালিককে ফেরত দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা খাইরুল ইসলাম খোকনকে গণসংবর্ধনা দিয়েছেন এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার বাদ এশা বেতগাড়ী বাইপাস এলাকায় এলাকাবাসী ছাড়াও সম্মিলিত নাগরিক জোট বগুড়া জেলা শাখা এবং বেতগাড়ী বাইপাস ট্রাক চালক সমিতির পক্ষ থেকে খোকনকে সংবর্ধিত করা হয়।
বগুড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে এবং ফয়সাল হোসেন লাবনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি সায়েদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আব্দুল মোত্তালেব বাদল সরকার, রেজাউল করিম মিন্টু, জেএসডি’র কেন্দ্রীয় নেতা রেজাউল বারী দীপন, ব্যাংকার নূর ই আলম, সার্জেন্ট (অব.) সগীর আহম্মেদ, সাংবাদিক সাজেদুর রহমান সবুজ, শিক্ষক তানভীর আহমেদ সখা, ব্যবসায়ী আবু বকর, জর্জিস হোসেন, মাওলানা রেজাউল করিম প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, একটি মহৎ কাজের বিনিময়ে হতদরিদ্র খোকন আজ সর্বমহলে সম্মানিত, প্রশংসিত ও দৃষ্টান্ত হতে পেরেছেন। ভবিষ্যত আজকের তরুণ ও যুব সমাজকে খোকনের কাছ থেকে সততা ও মানবতার শিক্ষা নিতে হবে। তাহলেই সমাজ থেকে অন্যায়, দুর্নীতি, প্রতারণা বিদায় নিবে। বাসযোগ্য একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সংবর্ধিত খোকন তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, সৎ পথে চলতে হয়তো একটু কষ্ট হয়। তারপরও তা সুন্দর। সৎ কাজের পুরস্কার এতোটা মধুর হয় তা তার জানা ছিল না। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তার জীবনে এক নতুন অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। এ অভিজ্ঞতা তাকে আগামীতে সুন্দরভাবে পথ চলতে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুনউল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে শাহীন আলম নামের এক যাত্রী বগুড়া শহরের সাতমাথায় তার অটোরিকশায় উঠেন এবং নামেন বনানী এলাকায়। অটোরিকশা থেকে নেমে যাবার সময় তিনি ভুলে রেখে যান প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার এবং টাকা। খোকন প্রকৃত মালিকের হাতে স্বর্ণালংকার পৌঁছে দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
সহকর্মী অটোরিকশা চালকদের সহযোগিতা নিয়ে খুঁঁজে বের করেন শাহীন আলমকে। অবশেষে ৪ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে বগুড়া সদর থানায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে মালিকের হাতে তুলে দেন কুড়িয়ে পাওয়া স্বর্ণালংকার। সততার এ বিরল ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপক সাড়া পড়ে নেটিজেনদের মাঝে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
একটি মহৎ কাজের জন্য নানা মহলের প্রশংসায় ভাসতে থাকেন হতদরিদ্র খোকন। ঘটনাটি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আলোচনায় স্থান পাওয়ায় খোকনের পরিবারসহ তার এলাকার প্রতিটি মানুষের বুক গর্বে ভরে ওঠে।
মন্তব্য করুন