ভিডিও বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

গোলটেবিল আলোচনায় ফরহাদ মজহার

`আমি তরুণদের ব্যাপারে অসম্ভব রকম চিন্তিত'

কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার । ছবি: সংগৃহীত।

কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জনগণের প্রতিনিধিত্ব করত কিন্তু জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সেটা করছে না। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিএমএ ভবনের শহীদ ডা. মিলন হলে সম্মিলিত বাংলাদেশ পরিষদ আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।ফরহাদ মজহার বলেন, তরুণদেরকে ৫ থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বারবার বলেছি, ধীরে ধীরে তোমরা একটা বিপজ্জনক জায়গায় চলে গেছো। তোমরা যে রাজনীতির মডেল আমাদেরকে দিচ্ছ, এটা লুটেরাদের মডেল। নির্বাচনের মডেল দ্বারা তোমরা কিছু করতে পারবা না। এই নির্বাচনের মডেল দ্বারা আমরা গণ-অভ্যুত্থান করি নাই। গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে তরুণদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। এখন এনসিপি এসেছে, তারা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো একই। ওদের রাজনৈতিক দল ওদের জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করে।

গণ-অভ্যুত্থানে যারা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের, তারা কিন্তু জনগণের প্রতিনিধিত্ব করত। এনসিপি কিন্তু জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে না, এটা মনে রাখতে হবে। আমি যখন একটা দল মানি, তাহলে আমি সেই দলকে রিপ্রেজেন্ট করি। তোমাদেরকে কমপিট করতে হবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে।তিনি বলেন, আজকে সবচেয়ে বড় বিপদের জায়গা হচ্ছে এই তরুণদের ওপর আগামীতে যদি হামলা হয়, তাদের আমরা রক্ষা করব কীভাবে। আমরা এই সংবিধানের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছি আমাদের এবং এটা করার পরে আমরা কথা বলছি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে, যারা নিজেদের দাবি করছে রাজনৈতিক দল হিসেবে, কিন্তু তারা রাজনৈতিক দল কি না—এই বিচার আমরা করছি না। তারা যদি নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন না করে, তাহলে আপনি কী করে ঠিক করবেন কে রাজনৈতিক দল আর কে রাজনৈতিক দল নয়? এই রাজনৈতিক দলগুলোতে লুটেরা মাফিয়াদের প্রতিনিধি আছে।

আজকে যখন ড. ইউনূস তাদের সঙ্গে কথা বলছে, একবারও তাদেরকে বলেন নাই যে তোমরা নিজেরাও নির্বাচন করে আসো। নির্বাচন চাচ্ছ আমাদের কাছে ভালো কথা, তো তোমরা আগে নিজেরা নিজেদের মধ্যে নির্বাচন করে আসো। তাদের মধ্যে নির্বাচন নেই, কাউন্সিল নেই। এই যে ব্যাপারগুলো রয়ে গেছে, তরুণরা এই ব্যাপারটা খেয়াল করছে না। তাই আমি তরুণদের ব্যাপারে অসম্ভব রকম চিন্তিত বলেন তিনি।

আরও পড়ুন

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা শতভাগ সমর্থন করি এবং তিনি কিন্তু জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, আমাদের রক্ত দিয়ে নির্বাচিত। তাহলে তার কিন্তু জনগণের প্রতি অঙ্গীকারের কথা ছিল। কিন্তু তিনি কথা বলছেন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। জনগণের সঙ্গে তিনি কোথায় কথা বলছেন? তিনি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন না। আমি তো দেখিনি তিনি জনসভায় জনগণের কাছে গেছেন বা তার লোকজনদের বলছেন, যাও তোমরা আগে গ্রামে যাও, উপজেলায় যাও, জেলায় যাও কিংবা ডিসিকে বলছেন যাও তোমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলো। জনগণের অভিপ্রায় কী সেটা জানো।

অভিপ্রায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যদি বাংলাদেশের এই বিদ্যমান সংবিধান পড়েন, দেখবেন সেখানে পরিষ্কার লেখা আছে, জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি, এটাকে বলা হয় গঠনতন্ত্র। আমি কয়দিন থেকে বলছি, নির্বাচন দ্বারা গণতন্ত্র হয় না। অনেক রাজনৈতিক দল আমাকে বলবে, আপনি তো নির্বাচন চান না। আমি বলব অবশ্যই নির্বাচন চাই। কিন্তু রাষ্ট্র যখন গঠিত হয়েছে, এটা তো নির্বাচনের দ্বারা হয়নি। এটা হয়েছে অভ্যুত্থান দ্বারা, বিপ্লব দ্বারা।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত বাংলাদেশ পরিষদের সভাপতি ড. মো. আমিরুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনাবিদ খন্দকার নিয়াজ রহমান। এতে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, উমামা ফাতেমা, তাসনিম আফরোজ ইমি প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি নেতা আমান ও তার স্ত্রী’র সাজা বাতিল

জামিনে কারামুক্ত মডেল মেঘনা আলম

দ্বিতীয় দিনের ফ্লাইটে হজে যাচ্ছেন ৫ হাজার ৫৩০ যাত্রী

কলকাতায় বহুতল ভবনের অগ্নিকান্ডে নিহত ১৪ 

তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতির ঘটনায় আমাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই: সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে তিনশ পেরিয়েছে বাংলাদেশ