বাড়ি বাড়ি ঘুরে গরু কিনছেন ব্যাপারীরা
পাবনার বেড়ায় এখনও জমে ওঠেনি পশুর হাট

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : দেশের অন্যতম গবাদিপশু উৎপাদনকারী এলাকা বলে পরিচিত পাবনার বেড়া উপজেলার পশুর হাটগুলো এখনও জমে ওঠেনি। তবে কোরবানির হাটকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন এলাকার গরুব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই এ উপজেলায় এসে ভিড় জমিয়েছেন।
হাট জমে না ওঠায় তাদের বেশির ভাগই স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে খামারি ও গৃহস্থদের কাছ থেকে গরু কিনছেন। তবে হাট থেকেও তারা গরু কিনলেও তার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ব্যবসায়ীরা গরু কেনার পর নৌকা ও ট্রাকে করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার হাটে পাঠাতে শুরু করেছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেড়া উপজেলায় এবার কোরবানির উপযোগী গরুর সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার, মহিষ ৭০৬টি এবং ছাগল ৪৭ হাজার ৩১৫টি ও ভেড়া ৭ হাজার ৩৯৯টি। অর্থ্যাৎ সব মিলিয়ে এবার এ উপজেলায় কোরবানির উপযোগী গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার ২৬৬টি। তবে খামারিদের সংগঠন ও গরু ব্যবসায়ীদের মতে এ উপজেলায় কোরবানির উপযোগী পশুর সংখ্যা প্রায় সোয়া ১ লাখ। আর এসব গবাদিপশুর মধ্য থেকে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৯০ হাজার গবাদিপশু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার কোরবানির হাটে চলে যাবে।
এদিকে খামারি ও সাধারণ গরু পালনকারীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু গরুর দাম উল্টো গত বছরের তুলনায় কমেছে। বাড়িতে একদিন বড় গরু রাখা মানেই গোখাদ্য বাবদ প্রতিদিন ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়ে যাওয়া। তাছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কোরবানির হাটে গরুর দাম বেশি হবে, না উল্টো কমে যাবে তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। তাই কোরবানির হাটের আগেই বাড়ি থেকে খামারি ও পালনকারীরা ব্যাপারীদের কাছে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুনবেড়া উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বেড়ার বনগ্রাম মহল্লার খামারি মাহফুজা মীনা বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে দেখছি হাটে নিয়ে বিক্রি করার চেয়ে বাড়ি থেকে ব্যাপারীর কাছে গরু বিক্রি করাই লাভজনক। গত এক মাসে আমি আমার খামার থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকার কোরবানির গরু ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করেছি। এর মধ্যে চার-পাঁচদিন আগে দুটি বড় ষাঁড় সাড়ে ৭ লাখ টাকায় বেঁচেছি।
এবার গরুর দাম কম। তা ছাড়া গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু খামারে বেশিদিন রাখা মানেই আরও লস।’ উত্তরাঞ্চলের অন্যতম পশুর হাট বেড়া পৌর এলাকার করমজা চতুরহাটে গিয়ে দেখা যায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম গরু উঠছে।
হাটে থাকা গরুর ব্যাপারী ও হাট কমিটির সদস্যরা জানান, গোখাদ্যের অস্বাভাবিক দামের কারণে এবার খামারিদের গরু পালনের খরচ অনেক বেড়েছে। এছাড়া হাটে গরুর দামও গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। ফলে হাটে খামারি ও গরু পালনকারীরা কম গরু আনছেন।
মন্তব্য করুন