লালমনিরহাটে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে কামার পল্লীতে, জ্বলছে লোহা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : আর মাত্র একদিন বাকি। দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসবের ঈদুল আজহা। লালমনিরহাটের কামার পল্লীগুলোতে পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুতের জন্য ছুরি, চাপাতি, বটি, দা তৈরি করতে দিনরাত খাটছেন জেলার কামাররা।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের শালমারা কামারপাড়ায় প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার প্রজন্ম ধরে কামারের কাজ করেন। সারাবছর কাজ কম থাকলেও কোরবানি ঈদের আগ মুহূর্তে জমজমাট হয়ে ওঠে তাদের কর্মযজ্ঞ।
ওই এলাকার কামার নবিয়ার রহমান বলেন, বছরের অন্য সময় দিনে দুই-তিনটা ছুরি-বটি তৈরি করি। কিন্তু এখন প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি তৈরি করছি। পরিবারের সবাই মিলে কাজ করছি। গতবছর কেবল ঈদের আগের দুই সপ্তাহে প্রায় ৫০ হাজার টাকার বিক্রি হয়েছিল।
চুলার আগুনে গরম লোহা পিটিয়ে ছুরি-চাপাতি তৈরির দৃশ্য এখন প্রতিটি কামারপল্লীতে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন তারা। যেন কথা বলার সুযোগ নেই তাদের। কেউ বিভিন্ন ধরনের চাপাতি, ছুরি, বটি ও চাকু তৈরি রছেন। কেউ স্থানীয় বাজারে ও জেলার বাইরে এসব বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুনএকই উপজেলার কুমড়ীরহাট হাটের বিক্রেতা লিয়াকত আলী বলছিলেন, পাইকারি দরে কামারদের কাছ থেকে কিনে বিভিন্ন হাটে বিক্রি করি। এবছর বড় ছুরি বিক্রি করছি ৭শ’ টাকা, চাপাতি ৮শ’, মাঝারি ছুরি ৫শ’, ছোট ছুরি ২শ’ আর বটি ৬শ’ টাকায়। তবে এ বছর অন্যান্য জেলার পাইকারদের আগমন কিছুটা কম, ফলে বিক্রি কিছুটা কম হতে পারে বলে আশঙ্কা কামারদের।
ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা যাবে। না হলে এই শিল্প ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে। কামার শিল্পে জড়িতদের সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মন্তব্য করুন