ভিডিও শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

পাচারকারকৃত অর্থ ফেরাতে ‘সমঝোতার’ কথা ভাবছে বাংলাদেশ : ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

পাচারকারকৃত অর্থ ফেরাতে ‘সমঝোতার’ কথা ভাবছে বাংলাদেশ : ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অন্তর্বর্তী সরকার যেসব ধনকুবেরকে অভিযুক্ত করেছে, তাদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতায় পৌঁছানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা ‘অন্যতম বিকল্প’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। 

গভর্নর বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় তিনি ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য রাখছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, বিগত সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ থেকে বহু বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সফরের আগে ঢাকায় দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে। গভর্নর বলেন, ‘যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয়...তবে আমরা দেওয়ানি মামলা করব এবং সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আর্থিক সমঝোতার কথা বিবেচনা করা হবে।’ তবে সম্ভাব্য কোন ব্যক্তিরা এ প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে পারেন, সে বিষয়ে কোনো উদাহরণ দেননি তিনি।

অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার পরিবারসহ আগের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১১টি তদন্ত শুরু করেছে। বর্তমান প্রশাসন কিছু অভ্যন্তরীণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে এবং শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করছে। পাচার করা অর্থ শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে এ ধরনের প্রচেষ্টা এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে মুহাম্মদ ইউনূস এ সপ্তাহে লন্ডন সফরকালে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে আরও ‘উৎসাহব্যঞ্জক সহযোগিতা’ কামনা করেন।  প্রধান উপদেষ্টা ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা চুরি হওয়া অর্থ। আইনগতভাবে এবং “আমি বলব নৈতিকভাবেও” যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত এই অর্থ শনাক্ত করতে সহায়তা করা।’

আরও পড়ুন

প্রসঙ্গত, সরকারের নির্দেশনায় তৈরি ও গত ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে অনুমান করা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন (২৩ হাজার ৪০০ কোটি) ডলার পাচার হয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা আহসান মনসুর ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মিত্ররা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দখল করে জাল ঋণ নিয়ে কিংবা সরকারি অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো থেকে আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে অর্থ পাচার করেছেন।

মনসুর জানান, তার দল আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ও বাংলাদেশে এসে সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মামলা পরিচালনায় অর্থের জোগান দেয়া সংস্থাগুলোর খরচের মধ্যে আছে আইনজীবীর ফি, আদালতের ব্যয় ইত্যাদি। বিনিময়ে মামলায় সফল হলে সমঝোতার ভিত্তিতে বা পুরস্কার হিসেবে কিংবা আগেই নির্ধারণ করা অর্থ গ্রহণ করে থাকে তারা। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি এবং এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই, যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করা।’

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আম্মা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন: তারেক রহমান

খুলনায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে ৮০ হাজার টাকা লুট

লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শুরু | Tarique Rahman | BNP | Muhammad Yunus | Daily Karatoa

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে এবার বোমাতঙ্ক, থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণ

ইরানে হামলার পর বিশ্ববাজারে ৯% বেড়েছে তেলের দাম

‘কিংস তৃতীয় চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করলেন অধ্যাপক ইউনূস