বগুড়ার ধুনটে ঈদ বকশিশ না পেয়ে স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : ধুনটে ঈদ উপলক্ষে শ্বশুর-শাশুড়ির পক্ষ থেকে ঈদ উপহার না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্বামী সাগর মিয়াকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার (২০ জুন) দুপুর ২টায় ধুনট থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে সাগর মিয়াকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাগর মিয়া উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের সাগাটিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধুনট পৌরসভা কার্যালয় এলাকা থেকে সাগর মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলা সদরের তাড়াশ থানা পাড়া এলাকার রহিম উদ্দিনের মেয়ে শাম্মি খাতুনের (২২) প্রায় ৫ বছর আগে সাগর মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সাগরকে প্রায় ৪ লাখ টাকা যৌতুক দেয় শাম্মির মা-বাবা। বিয়ের পর সুখেই কাটছিল সাগর-শাম্মির দাম্পত্য জীবন। তাদের ঘরে তিন বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
এ অবস্থায় সংসারের অভাব অনটনের কারণে সাগর প্রায়ই শাম্মিকে বাবার বাড়ি থেকে অতিরিক্ত যৌতুকের টাকা নিয়ে আসতে বলে। কিন্ত শাম্মির মা-বাবার পক্ষে যৌতুকের টাকা দেওয়া সম্ভব না। এ বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হয় এবং সাগর ও তার মা-বাবা সহ পরিবারের লোকজন শাম্মিকে নানা ভাবে নির্যাতন করে। এ অবস্থায় ঈদ উপলক্ষে ২০ হাজার টাকার জন্য ৩ জুন সাগর ও শাম্মি তাড়াশ গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে যায়। কিন্ত টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দিনই স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে সাগর।
আরও পড়ুনএ বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদের এক পর্যায়ে ১০জুন দুপুর আড়াইটায় সাগর ও তার মা-বাবা সহ পরিবারের লোকজন জোরপূর্বক শাম্মির মুখের ভেতর বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট ঢুকে দেয়। এরপর অচেতন অবস্থায় শাম্মিকে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় শাম্মি খাতুন মারা যায়।
এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত শাম্মির মা চায়না খাতুন বাদি হয়ে ধুনট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করে বৃহস্পতিবার থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড করেছে। ওই মামলায় সাগর মিয়া ও তার মা-বাবা সহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আইনী প্রক্রিয়া শেষে শাম্মির মৃতদেহ তার মা ও বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই হত্যা মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন