সিরাজগঞ্জে ৫০০ বছরের পুরানো জয়সাগর’ দিঘীটি ঐতিহ্য হারাচ্ছে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জ সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে রায়গঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলায় যে কয়েকটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ৫০০ বছর আগের ‘জয়সাগর দিঘী’ অন্যতম। জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিমগাছিতে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জয়সাগর দিঘী। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই দিঘীর পাড়ে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী।
অথচ সংস্কারের অভাবে দিঘীর পাড় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া চারপাড়ে ২৮টি বাধা ঘাট থাকলেও এখন এর কোনো চিহ্ন নেই। সবমিলিয়ে বর্তমানে দিঘীটি ঐতিহ্য হারাচ্ছে। ঐতিহ্য রক্ষায় দিঘীটির সংস্কার বা উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দর্শনার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, দিঘীটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ছিল আধা মাইল, আয়তন প্রায় ৫৮ একর। এই দিঘীটি নিয়ে অনেক লোককথা প্রচলিত আছে। সেন বংশীয় রাজা অচ্যূত সেন গৌড়াধিপতি ফিরোজ শাহ’র রাজধানী ছিল কমলাপুর। ফিরোজ শাহের পুত্র বাহাদুর শাহ অচূ্যূত সেন রাজার কন্যা অপরূপ সুন্দরী ভদ্রাবতীকে দেখে মুগ্ধ হন। তিনি তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন।
আরও পড়ুনকিন্তু রাজা অচ্যূত সেন সম্মত না হওয়ায় বাহাদুর শাহ কমলাপুর আক্রমণ করে ভদ্রাবতীকে অপহরণ করে নিমগাছিতে নিয়ে যান। রাজা অচ্যূত সেন তার সৈন্যবাহিনীসহ বাহাদুর শাহকে আক্রমণ করেন। নিমগাছিতে উভয়ের মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধ হয়। বাহাদুর শাহের মুষ্টিমেয় সৈন্য, সেনরাজের বিরাট সৈন্যবাহিনীর কাছে যুদ্ধে (১৫৩২-৩৪ খ্রিষ্টাব্দ) পরাজিত হন।
এ বিজয় গৌরবের স্মৃতি হিসেবে এবং পরকালের কল্যাণের জন্য তিনি নিমগাছির কাছে ‘জয়সাগার’ নামে এক দিঘী খনন করান। যুদ্ধজয়ের কারণেই দিঘীটির নাম হয় ‘জয়সাগর’। জয়সাগরের ৪ পাড়ে ২৮টি বাধা ঘাট দিয়ে জয়সাগর দিঘী তৈরি করা হলেও বর্তমানে এ ঘাটের কোনো চিহ্ন নেই। বিশাল দিঘীটির ভেতরে রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি দিঘী। অতীতের জয়সাগরের জৌলুস আগের মতো আর নেই। সংস্কারের অভাবে দিঘীর পাড় বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন