সিরাজগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দুই লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন(৩০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী মো. মতিউর রহমান দস্তগীর ওরফে আব্দুল মতিনকে(৪৬) মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসাথে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই আসামিকে দ্য পেনাল কোডের ২০১ ধারায় সাত বছরের কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ দন্ডাদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত মতিন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বাসিন্দা। আদালতের পেশকার মো. মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২জুন মানিকগঞ্জ জেলার ঘিয়র উপজেলার তেরোদোনা গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন আব্দুল মতিন দস্তগীর। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মতিন তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। কিন্তু সাবিনার বাবা আব্দুল কাদের যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সাবিনাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে যৌতুকের টাকা চাইলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ফিরিয়ে দেন। পরে বাড়িতে এসেই স্ত্রী সাবিনাকে ব্যাপক মারধর করেন তিনি। এর দু’দিন পর থেকে সাবিনা ও তার স্বামী মতিনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনদীর্ঘদিন তাদের ফোন বন্ধ পেয়ে ১০ সেপ্টেম্বর সাবিনার বাবাসহ অন্যান্য আত্মীয়রা মেয়ের খোঁজে তাড়াশের ভায়াট গ্রামে যান। সেখানে গিয়ে সাবিনাকে না পেয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। ১৩ অক্টোবর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন, কিছুদিন আগে তাড়াশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি শুনে তাড়াশ থানায় খোঁজ নিয়ে সাবিনার পরিবারের লোকজন মরদেহ শনাক্ত করেন। তখন পুলিশ তাদের জানায়, ২৯ সেপ্টেম্বর তাড়াশের মথুরাপুর নামক স্থানে ধানক্ষেত থেকে সাবিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাবিনার ভাই আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আব্দুল মতিন দস্তগীরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয়। বিচারক শুনানি শেষে গত বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন