ভিডিও সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫

‘পৃথিবীর আর কোনো স্টেডিয়ামে কি পিচের পাশে সবজির বাগান আছে?’

‘পৃথিবীর আর কোনো স্টেডিয়ামে কি পিচের পাশে সবজির বাগান আছে?’, ছবি: সংগৃহীত।

স্পোর্টস ডেস্ক: গামিনি ডি সিলভা যখন দেশে ফিরতে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পার হচ্ছিলেন, সেই মধ্যদুপুরে টনি হেমিং পৌঁছান মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। নতুন চুক্তিতে দুই বছরের জন্য দেশের সব জাতীয়-আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুতে স্পোর্টিং উইকেট প্রস্তুত করা, আন্তর্জাতিক মানের কিউরেটর গড়ে তোলা এবং মাঠকর্মীদের প্রশিক্ষিত করার বিশাল দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এসেছেন তিনি। বিসিবির এ কিউরেটরের প্রথম কাজ হবে মিরপুরের উইকেটের ‘স্লো’ রোগ সারিয়ে স্পোর্টিং করে তোলা। 

তারই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গতকাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন তিনি। আউটারে জহুরির মতো পিচ নেড়েচেড়ে দেখার সময় তাঁর চোখে পড়ে একটি পুঁইশাকের বাগান। তিনি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে প্রধান মাঠকর্মী রকির কাছে জানতে চান পিচের পাশে শাকের বাগান কেন? প্রথমে রসিকতা করেন– এই বিশেষ শাক কে খায়? পরক্ষণেই শ্লেষের সুরে বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোনো স্টেডিয়ামে কি পিচের পাশে সবজির বাগান আছে?’ এই প্রশ্ন শোনার পর উপস্থিত সবাইকে চুপসে যেতে দেখা গেছে।

বিসিবি একাডেমি মাঠের উত্তর পাশের দেয়াল ঘেঁষে সবজির বাগান করেন মাঠকর্মীরা। ইনডোরের পাশের আউটারে উইকেটের দুই দিকে পুঁই, ঢ্যাঁড়শের গাছ দেখা যায়। গামিনি জিনিসগুলো দেখেও না দেখার ভান করতেন। কারণ মাঠকর্মীদের সঙ্গে ১৫ বছরের সম্পর্ক তাঁর। শ্রীলঙ্কান এ কিউরেটরের ক্যারিয়ারটাই আসলে ভুলে ভরা। কখনও দেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে খবর হয়েছেন। ঢাকার বাসায় ফুটপাতের যৌনকর্মী নেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বিসিবিতে নালিশ দিয়েছিলেন বাড়ির মালিক। এবাদতের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুঙ্কার ছুড়েছিলেন দুই মাস আগে। 

এসব ছাপিয়ে গামিনির বড় ভুল ধরা পড়ে একাডেমি মাঠের গ্রিন শেডে ভুলভাবে উইকেট বানানোয়। সাধারণ শেডের ভাঁজের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাল করা হয়ে থাকে। সেখানে গামিনি উল্টোভাবে মাটি ফেলায় পিচ ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে এই বর্ষা মৌসুমেও গ্রিন শেড কাজে লাগেনি। বৃষ্টি হলেও খোলা মাঠে অনুশীলন করতে হয়েছে। এ কারণে গামিনিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন

এই ভুলের কারণেই গামিনিকে বাদ দেওয়ার জোরালো দাবি ওঠে বোর্ডে। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজের উইকেট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন তিনি। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল তাঁকে মিরপুর থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতেই টনি হেমিংকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড। বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম উদ্যোগ নিয়ে হেমিংকে নতুনভাবে নিয়োগ দেন। যেখানে সভাপতি বুলবুলের পূর্ণ সমর্থন ছিল। কারণ আইসিসিতে চাকরি করার সময় থেকে হেমিংকে চেনেন বুলবুল। দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি মাঠের উইকেট এই অস্ট্রেলিয়ানের হাতে গড়া। অস্ট্রেলিয়ার পার্থের উইকেট নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর।

ক্রিকেট পিচ বানানোর বিশাল অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কিউরেটরকে নিয়োগ দেওয়া হলেও গামিনিকে চাকরিচ্যুত করবে না বিসিবি। তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে ঢাকার বাইরে কোনো ভেন্যুতে কাজ করতে হবে। যদিও গতকাল গুঞ্জন ছিল গামিনি শ্রীলঙ্কায় ফেরার পর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। বিসিবিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ রকম কিছু ঘটেনি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র বিষয়কেই বিকৃত দৃষ্টিতে দেখা হয়’

লিভারপুলকে চমকে দিয়ে কমিউনিটি শিল্ড জয় ক্রিস্টাল প্যালেসের

দিনাজপুর বিরলে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে এসেছেন চীনা প্রেমিক 

ওসি প্রদীপের ফাঁসির তারিখ দ্রুত ঘোষণার দাবি

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন আবেদন হাইকোর্টে

ভারতে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক