ঠাকুরগাঁওয়ে ‘দয়াল বাবা’র অনুসারীর জানাজা নিয়ে দিনভর টানাপোড়েন

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের জামাদারপাড়া গ্রামে এক ব্যক্তির দাফনকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার দিনভর চলেছে টানাপোড়েন। দবিরুল ইসলাম (৫২) নামের ওই ব্যক্তি ভোররাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কিন্তু তিনি ‘দয়াল বাবা’ নামে একটি তরিকার অনুসারী ছিলেন এমন অভিযোগে তার জানাজা ও দাফন নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তৈরি হয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব।
গত মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে দবিরুল মারা গেলে সকালে তার লাশ বাড়িতে রাখা হয়। কিন্তু দিন গড়ালেও জানাজা হয়নি। বিকেলের দিকে গ্রামের মানুষ ও আশপাশের কয়েক গ্রামের মুসল্লিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ভ্রান্ত মতবাদের অনুসারী হওয়ায় তার জানাজা দেওয়া যাবে না। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
জামাদারপাড়া মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হাদী বলেন, দবিরুল ‘দয়াল বাবা’র অনুসারী ছিলেন। সেই তরিকায় বলা হয়, হাঁটতে হাঁটতে নামাজ পড়া যায়, খেতে খেতেও রোজা রাখা যায়। এগুলো ইসলামের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এলাকাবাসী জানান, দবিরুল তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে কয়েক বছর আগে ওই তরিকার অনুসারী হন। এরপর থেকে তারা গ্রামের মসজিদে খুব একটা আসতেন না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ জমতে থাকে। পরিস্থিতি জটিল হলে বিকেল ৪টার দিকে জামাদারপাড়া ও আশপাশের পাঁচ গ্রামের শতাধিক মানুষ বৈঠকে বসেন। সেখানে দবিরুলের দুই ছেলে রেজেকুল ও সুবহান সবার সামনে স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে তওবা পড়েন এবং তারা প্রতিশ্রুতি দেন, তারা আর ‘দয়াল বাবা’র পথ অনুসরণ করবেন না। এরপর গ্রামের ইমাম, মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিরা জানাজা দেওয়ার বিষয়ে একমত হন।
দবিরুলের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভিন বেগম বলেন, ‘এলাকার মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমার ভাসুরের দাফন সম্পন্ন হয়।’
আরও পড়ুনজামাদারপাড়া ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এলাকাবাসী চেয়েছিলেন, যেন দবিলুলের সন্তানরা আর ভ্রান্ত পথে না যান। তারা সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরই সবাই জানাজা ও দাফনে অংশ নেন।
মন্তব্য করুন