পটুয়াখালীতে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার আগে ট্রলারে পৌঁছাতে দেরি করায় ট্রলার মালিকের পিটুনিতে হেলাল হাওলাদার নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন। এছাড়া মারধরে আহত আরও তিন জেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতবৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টায় জেলার বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলীপুর মৎস্য বাজারে আল-আমিনের আড়তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হেলাল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার তুষখালী গ্রামের হারুন হাওলাদারের ছেলে।
আহত অন্য তিন জেলে হলেন- সাদ্দাম আকন, ইউনুচ ও আসাদুল। তাদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল থেকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ও আহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সমুদ্র যাত্রায় প্রস্তুত ট্রলারে আসতে দেরি করায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় আল-আমিনের মাছের গদিতে উপস্থিত পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া এলাকার তামান্না নামের ট্রলার মালিক মন্টু ফরাজি ব্যাপক মারধর করেন। মারধরে অসুস্থ তিন জেলেকে নিয়ে সাগরে বের হয় ট্রলার। কিছুদূর যাওয়ায় পর অসুস্থ জেলেদের অবস্থার অবনতি হলে ফিরে আসে ট্রলার। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জেলে হেলাল হাওলাদারকে মৃত ঘোষণা করেন। সঙ্গে থাকা অপর তিন জেলে বর্তমানে কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত জেলে আসাদুল বলেন, আমরা পিরোজপুরের ট্রলার নিয়ে এখানে মাছ বিক্রি করতে আসি। মাছ বিক্রি করা শেষে সন্ধ্যার পরে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে যাই চারজন। এরপরে ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে নামার সময় হলে সময়মতো আমরা আসতে পারিনি। আমরা বৃহস্পতিবার রাতে আলীপুরে পৌঁছাই। সময়মতো পৌঁছাতে না পারার কারণে আমাদের ট্রলার মালিক মন্টু ফরাজি ও মোশাররফ মিয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও বেধড়ক পেটান।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে আমাদের মারতে দেখে হেলাল একটি দেওয়ালের পাশে গিয়ে আত্মগোপন করে। মন্টু মিয়া সেখানে গিয়ে তার মাথা ও মুখ বরাবর একটি লাঠি দিয়ে আঘাত করে। হেলাল সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। এরপরে রাতে হালকা ওষুধ খেয়ে আমরা ট্রলারে থাকি। সকালে অবস্থা খারাপ দেখে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ফেরত দিয়ে কলাপাড়া হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মারা যায় হেলাল।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদ হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি তারা নিজেরা আড়াল করেছে।
গতকাল শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) খবর পেয়ে ময়নাতদন্তের জন্য হেলালের মরদেহ পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা এসে পৌঁছালে মামলার করা হবে।