ভিডিও বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজায় চলছে ইসরাইয়েলি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা

গাজায় চলছে ইসরাইয়েলি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা

কখনো বিমান হামলা করে, কখনো অভুক্ত রেখে, কখনো ত্রাণ দেয়ার নামে ডেকে, কখনো তিলে তিলে আবার কখনো দ্রুত সবরকমভাবে অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে চলেছে ইসরায়েল। প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ৬৬২ দিন ধরে চলা এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৯০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

আহত হয়েছেন এক লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৭ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ দৈনিক আপডেটে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১১৩ ফিলিস্তিনির মরদেহ এবং আহত অবস্থায় ৬৩৭ জন আনা হয়েছে। এতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৪ জন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

এ ছাড়াও আহতের সংখ্যা বেড়ে এক লাখ ৪৫ হাজার ৮৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। অনেকে এখনো ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে যেতে পারছেন না। 
বিশ্ব বিবেক এখনও নীরব। মধ্যপ্রাচ্যের দেশের নেতারা তো বটেই, পাশ্চাত্যের মানবতার ফেরিওয়ালাদের চোখ বন্ধ হয়ে গেছে। সবার বিবেক যেন অনুভূতিহীন, মানবিক বোধ যেন দেউলিয়া হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের অনাহারী অসহায় মানুষদের প্রশ্নে সবাই যেন চেতনাহীন স্থবির।

গাজা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় চতুর্থাংশ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ সমর্থিত দ্য ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যামিফিকেশনের (আইপিসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী মাসের শেষ নাগাদ গাজা উপত্যকার মধ্যভাগের প্রশাসনিক অঞ্চল দেইর আল বালাহ এবং দক্ষিণের খান ইউনিসেও দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়বে। এতে করে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ লাখ ৪১ হাজার গাজাবাসী দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বেন।

গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। সন্দেহ নাই। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, নিহত বা আহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনো হাজার হাজার নারী-শিশু নিখোঁজ রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। গাজার শিশুদের সঙ্গে যা ঘটছে, তা যেন সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে প্রবঞ্চনা করার শামিল।

আরও পড়ুন

নিষ্পাপ, কোমলমতি শিশুদের ব্যাপারে নমনীয় ও যত্নশীল হওয়া এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার ব্যাপারে বিশ্বের ধর্মগ্রন্থগুলোতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। সমগ্র বিশ্বে শিশুদের সম্বোধন করা হয়, অ্যাঞ্জেল বলে অর্থাৎ তারা ফেরেস্তাতুল্য, কিন্তু সেই খোদা-প্রেরিত ফেরেশতার সঙ্গে আমরা কী ধরনের আচরণ করছি? আমরা কি স্মরণে রাখছি যে, ‘আল্লাহর খলিফা’ নামে অভিহিত শিশুদের সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, তার সকলই তিনি দেখছেন।

পরিস্থিতি এমন হয়েছে- গাজার হাজার হাজার শিশু স্বজন, পরিবারহীন হয়ে পড়েছে। আহত শিশুরা যে মুক্তি পেয়েছে, সেই আশাও নেই। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস বুলেট-বোমা, মিসাইলের শব্দে তাদের মানসিক অবস্থা কোন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করে মনোচিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, ট্রমাটাইডের শিকার এই সকল শিশুর উজ্জল ভবিষ্যতের কোনো সম্ভাবনা নেই।

এটি বিশ্বের জন্য সত্যিই বড় দু:সংবাদ। একদিকে ইসরায়েলের ভয়াবহ আগ্রাসন, অপরদিকে পর্যাপ্ত খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে দিনে দিনে গাজা পরিণত হচ্ছে ভয়াল মৃত্যুপুরিতে। গগণস্পর্শী লাশের স্তুপ, মুহূর্তের মধ্যে পরিবার- পরিজন হারিয়ে সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়ার বেদনা, ধুলোমাখা ক্ষুধার্ত শিশুর করুণ আর্তনাদ কোটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণে প্রতিবাদে নেমেছে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশ।

মানবতা জাগ্রত হোক-বিশ্ব নেতারা সম্মিলিতভাবে থামিয়ে দিক গাজাবাসীদের মৃত্যুর প্রহর গণনা- এখন বিশ্ববাসীর প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিক বিশ্ব এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। যে করেই হোক ইসরায়েলের এ বর্বরতা থামাতে হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজানের মতো ইকামতেরও কি জবাব দিতে হয়?

ডাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার অপেক্ষায় সিনেট হলে উপচেপড়া ভিড়

ভেতরে চলছে ভোটগণনা, শিক্ষার্থীরা বাইরে গাইছেন দেশের গান

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে নিয়োগ, বেতন ৮০ হাজার টাকা

নেপালের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার

এশিয়া কাপে দুর্দান্ত শুরু আফগানিস্তানের, আতাল-আজমাতুল্লাহর ব্যাটে ১৮৮ রান