রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিদেশে যাচ্ছে না বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অর্থকারী মুখরোচক খাবার পান। একারণে বাংলাদেশে পানের বাজারে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না চাষিরা। ঋণগ্রস্ত হতাশ চাষিরা এসব সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরসনের জন্য আট দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেছেন।
আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পান চাষি সমিতির বরিশালের গৌরনদী উপজেলা কমিটির আয়োজনে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পান চাষিদের রক্ষার জন্য পান রপ্তানি বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাস স্ট্যান্ড ও উপজেলা চত্বরে সমাবেশ করেছেন।
পান চাষি সমিতির উপজেলা আহ্বায়ক মনির হোসেন সরদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘পান চাষিরা লাখ লাখ টাকা এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পান চাষ করছেন। বর্তমানে বাজারে পানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে চাষিরা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না,
জেলা সভাপতি অধ্যাপক জলিলুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানি করে প্রতিবছর গড়ে দুই থেকে তিনশ’ কোটি টাকা আয় করা হতো। অথচ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শুল্ক বিভাগের অবাস্তব সিদ্ধান্তকে দায়ী করে তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে যেখানে প্রতি কেজি পানের রপ্তানি মূল্য ছিল এক ডলার, সেখানে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেই পানের প্রতি কেজির রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ ডলার। ফলে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পান নিচ্ছেন না। এ কারণে দেশে পানের বাজারে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না চাষিরা।
আরও পড়ুন
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক জাফর আহম্মেদ তালুকদার, পান চাষি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক নিমাই মণ্ডল, জেলার নেতা প্রফেসর মো. হারুন-অর রশিদ প্রমুখ।
দাবিগুলো হলো, ‘পান রপ্তানি বৃদ্ধি করতে আরোপিত সব বাঁধা সমূহ অতিদ্রুত অপসারণ করতে হবে। পান চাষিদের আপতকালীন সময়ে দুর্গত চাষিদের কাছ থেকে এনজিও ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখতে হবে। শুধুমাত্র পান চাষের ওপর নির্ভরশীল এমন গরীব চাষিদের সরকারি ত্রাণের আওতায় এনে তাদের পুর্নরেশন দিতে হবে।
পান রপ্তানি কারকদের সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি পান চাষিকেও প্রণোদনা দিতে হবে। পান চাষের উপকরণ খৈল, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য জিনিসের দাম কমাতে হবে। পান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনা ও সংরক্ষণাগার, পান ভিত্তিক শিল্প স্থাপন করতে হবে। পান চাষিদের জন্য বীমা চালু করতে হবে।