জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে দুই শিক্ষক ১১ মাস থেকে বেতন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : বিধি নিষেধ না থাকার পরও ক্ষেতলাল উপজেলার হোপপীরহাটা দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার দুই শিক্ষককে ১১ মাস ধরে বেতন না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মাসিক বেতন শিটে (এমপিও) নাম থাকা সত্ত্বেও দুই শিক্ষকের নাম স্থগিত করে অন্য শিক্ষকদের মাসিক বিল শিটের মাধ্যমে নিয়মিত বেতন তুলছেন মাদ্রাসা সুপার।
বেতন নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে এমন বিভেদের কারণে মাদ্রাসায় পাঠদান প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা অভিভাবকদের। এ ঘটনায় অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাদ্রাসা সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার হোপপীরহাটা দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক সংখ্যা ১২ জন। যার মধ্যে এবতেদায়ী প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের এবং ল্যাব-অ্যাসিসটেন্ট রুবিনা আখতার গত বছরের ১৮ আগস্ট মাদ্রাসায় যোগদান করেন। এর মধ্যে রুবিনা আখতারের এমপিও হয় গত বছরের পহেলা অক্টোবর এবং আবুল খায়েরের এমপিও হয় পহেলা নভেম্বরে। কিন্তু সেই থেকেই তাদের বেতন-ভাতা স্থগিত করা হয়েছে।
আইনগত কোন জটিলতা না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেতন প্রদানের নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল মান্নান এবং অ্যাডহক কমিটির সভাপতি সোহেল রানা। দীর্ঘদিন থেকে বেতন না পেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। যার প্রেক্ষিতে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল মান্নানকে গত ১৪ আগস্ট এবং ২ সেপ্টেম্বর পর পর দু’টি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও বিষয়টি সুরাহা করা হয়নি।
আরও পড়ুনমাদ্রাসার এবতেদায়ী প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের বলেন, বিধি মোতাবেক নিয়োগ নিয়ে শিক্ষকতা করে আসছি। সবাই বেতন তুলছেন। অথচ এমপিও থাকা সত্বেও আমাদের দু’জন শিক্ষকের বেতন স্থগিত করে রাখা হয়েছে। মাদ্রাসা সুপার এবং কমিটির সভাপতি আমাদের বেতন দিচ্ছেন না। ইউএনও স্যার চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু তারা কারো কথা শুনছেন না।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, তাদের নিয়োগ নিয়ে জটিলতা থাকার কারনে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পুণ:তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলেই তাদের বেতন দেওয়া হবে। এ জন্যই এমপিও শিটে তাদের নাম স্থগিত রেখে অন্য শিক্ষকদের বেতন শিট প্রস্তুত করা হয়েছে।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত বলেন,‘ওই দুজন শিক্ষকের যাবতীয় কাগজ-পত্রাদি পর্যালোচনা করে কোন ত্রুটি পাওয়া যায়নি। বেতন ভাতা প্রদানে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কোন বাধা বা নিষেধাজ্ঞাও নেই। তারপরও মাদ্রাসা সুপার বেতন স্থগিত রেখে কালক্ষেপন করছেন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর পর মাদ্রাসা সুপারের সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যায়নি। বেতন বন্ধের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে পুনরায় তাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। জবাব পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন