ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা সুদিন ফিরছে সোনালী আঁশে

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসা সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের সুদিন আবারও ফিরছে। গেল কয়েক বছর পাটের দাম না পেয়ে হতাশ ছিলেন চাষিরা। তবে এবছর সোনালী আঁশের চাহিদা ও ন্যায্য দাম সোনালী দিনে ফেরা ত্বরান্বিত করছে। চাহিদা এমন থাকলে আবারও পাট চাষে ঝুঁকে পড়বেন এ অঞ্চলের চাষিরা।
জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে এই এলাকায় পাটের দাম না পেয়ে হতাশ ছিলেন চাষিরা। পাটের চাহিদা বাড়ায় এবার ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। গত কয়েক বছর এই এলাকায় পাট ১৮শ’ থেকে ২৫শ’ টাকা মণ পর্যন্ত থাকলেও এবার ৩৮শ’ টাকা মণ। তবে ফুলবাড়ী উপজেলায় পাটের কোন বাজার না থাকায় পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলায় পাট বিক্রি করতে অনেকটা সময় ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এই উপজেলার কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১১ দশমিক ৮৩ বেল হিসেবে মোট ৭১০ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। একাধিক পাট চাষি কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় পাটের দাম পেয়ে তারা খুশি। অন্যান্য বছরে পাট চাষ করে দাম না পেয়ে লোকসানে পড়তে হত।
অনেকে লোকসান জেনেও শুধু জমির উর্বরতা ধরে রাখতে পাট চাষ করতেন। এভাবে কয়েকবছর পর আগ্রহ আরও কমে গেলে অনেকে জমি ফেলে রাখতে বাধ্য হত। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। এবার প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ৩৫শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায়। পাশাপাশি পাট কাঠিরও দাম ভালো। প্রতিমণ পাটকাঠি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকের বাড়তি লাভ হচ্ছে। এভাবে ভালো দাম থাকলে সামনের বছর পাটের আবাদ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে এ এলাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামে পাট ধোয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাহাবুর রহমান, আজিজুল হক ও নজরুল ইসলাম তিন চাষি। এসময় কথা বললে তারা জানান, অন্যান্য বছর পাটের তেমন দাম না পেলেও এবার ভালো দাম পেয়ে তারা খুশি।
আরও পড়ুনতবে ফুলবাড়ী উপজেলায় পাটের কোন আড়ৎ না থাকায় পাশের উপজেলায় গিয়ে পাট বিক্রি করতে হয় বলে কিছুটা ভোগান্তি হয়। ফুলবাড়ীতে তেমন কারখানা গড়ে না ওঠায় পাট শিল্পের বিকাশ ঘটছে না। তাই এ শিল্পের বিকাশ ঘটাতে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান তারা।
ফুলবাড়ী উপজেরা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহানুর রহমান বলেন, পাট খুবই সম্ভাবনাময় একটি ফসল। অতীতে এই উপজেলায় ব্যাপক হারে পাট চাষ হলেও দিন দিন কমতে থাকে। এ ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০জন কৃষকের মাঝে ২০বিঘা জমির বিপরীতে পাট বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। আগামীতে এই উপজেলায় পাটের চাষ ব্যাপক হারে বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন