মাটির কাজ প্রায় শেষ
তুলির আঁচড়ে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে মন্ডপ-কারখানায় ব্যস্ত শিল্পীরা

স্টাফ রিপোর্টার : শরতে ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টি ঝড়ছে। আকাশে ঘুমোড় ভাব; নীলআকাশ ছেড়া ছেড়া মেঘে শরতের আবহে দুর্গাপূজার আগমনী সুর বাজতে শুরু করেছে। আর মাত্র দশ দিন বাকি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার। এই উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে বগুড়ার প্রতিমা তৈরির শিল্পীদের দম ফেলার ফুসরৎ নেই। সময়মত প্রতিমা হস্তান্তর করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিটি শিল্পী ও কারিগর। অন্যদিকে আয়োজকরাও মন্ডপসজ্জা থেকে শুরু করে কিভাবে আলোকসজ্জা হবে তার পরিকল্পনা করছেন।
পুঞ্জিকা মতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর রোববার মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এবছর দশভুজার আগমন হবে গজে(হাতি) ও গমন করবেন দোলায় বা ঘোড়ায়। আর এই বিশেষ ক্ষণের জন্য দিন গুনছেন প্রতিটি ভক্ত অনুরাগী। এবার কেবল অপেক্ষা ঢাকের শব্দের। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বগুড়া সদরসহ আশেপাশের বিভিন্ন মন্ডপে শিল্পীরা মন্ডপ এবং মন্ডপের বাইরে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করলেও তা প্রায় শেষের পথে।
প্রতিটি কারখানায় শিল্পীরা প্রতিমার গায়ে শেষ কাদামাটির প্রলেপ লাগাচ্ছেন সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত। এখন রং তুলির আচড় এবং অলংকরণ করে ফুটিয়ে তুলবেন দেবীর সৌন্দর্য। তাদের হাতের শৈল্পিক ছোয়ায় দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠবে এক একটি প্রতিমা। এরপর পূজা শুরু হওয়ার একদিন আগে তারা প্রতিমা ডেলিভারি দিবেন মন্ডপে মন্ডপে। এদিকে আয়োজকরাও সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দৌঁড়ঝাপ করছেন।
বগুড়া সদরের উত্তর চেলাপাড়া নব বৃন্দাবন হরিবাসর মন্দির প্রাঙ্গনে ‘বিশ্ব কর্মা প্রতিমা তৈরির কারখানার স্বত্তাধিকারী কাজল চন্দ্র প্রামানিক জানান, এবছর বগুড়াসদরসহ নওগাঁ ও গাইবান্ধা জেলা থেকে ১৭টা প্রতিমা সেটের অর্ডার পেয়েছেন। এদিকে শ্রমিক সংকটের কারনে গতবারের চেয়ে এবার প্রতিমার অর্ডার কম নিয়েছেন। নিত্যপন্যের দাম বাড়ায় প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।
আরও পড়ুনকারিগর শ্রমিকদের খরচও বেড়েছে। সব মিলিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবুও সাজসজ্জা ও কাজের ওপর নির্ভর করে প্রতিটি সেট ২০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় অর্ডার নিয়েছেন। আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং কোন সমস্যা না হলে আশা করছেন সময়মত সব প্রতিমা ডেলিভারি দিতে পারবেন।
অপরদিকে চেলোপাড়া এলাকার আরও একটা প্রতিমা তৈরির কারখানা লক্ষী প্রতিমা হাউস। এর সত্ত্বাধিকারী জয়ন্ত কুমার জানান, গতবছর তিনি মন্ডপে মন্ডপে গিয়ে প্রতিমা বানিয়ে দিয়ে এলেও এবছর তিনি তাদের কারখানায় প্রতিমা সেট বানাচ্ছেন। তিনি তিনটি প্রতিমা সেটের অর্ডার পেয়েছেন। পূজা শুরুর আগের দিন পর্যন্ত কাজ চলবে। এক একটি প্রতিমার সেট বানাতে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়।
বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র পরিমল চন্দ্র দাস জানান, এবার বগুড়া জেলায় ৬৮১ মন্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে দুর্গাপুজার আয়োজন করা হয়েছিল ৬৭৭টি মন্ডপে। সে তুলনায় এবার বগুড়ায় ৪টি বেশি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য করুন