কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সহিংসতা
পরিবহন খাতে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা
বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতি জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতাকারীদের অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ফলে পরিবহন খাতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এছাড়া শাটডাউন-কারফিউ চলাকালে যানবাহন বন্ধ থাকায় দৈনিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ওপরে।
সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলিয়ে এ ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকার উপরে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে রাজধানীসহ পুরো দেশ।
দেওয়া হয় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি। ফলে বন্ধ থাকে যান চলাচল। আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে জ্বালাও-পোড়াও ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে নামে একদল দুর্বৃত্ত। যারা ভাঙচুর ছাড়াও পুড়িয়ে দেয় বহু বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক। এরপর সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের দেয়া কারফিউয়ে পুরোপুরি বন্ধ থাকে গাড়ির চাকা।
বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির তথ্য বলছে, সহিংসতা চলাকালীন সারা দেশে মোট ২০০টির বেশি যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকার উপরে। আর যান চলাচল বন্ধের কারণে টানা ৮ দিনে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুনএই পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট আরও অনেকেই বলছেন, যেকোনো আন্দোলন-সহিংসতায় প্রধান টার্গেট হয় পরিবহন। এতে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি আর শঙ্কায় সময় কাটে মালিক ও শ্রমিক উভয়ের।
ঢাকা সড়ক মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুল আলম খোকন বলেন, যানবাহনে আগুন দিলে এর ভয়াবহতা বেশি হয়। মানুষের জীবনযাত্রায় এর প্রভাবও বেশি পড়ে। এজন্যই হয়তো পরিবহনকে সব সময় টার্গেট করেন আন্দোলনকারীরা। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক মালিক অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘আমাদের গাড়ি রাস্তাঘাটে চলে। এগুলো তো আর তালা দিয়ে আটকে রাখা যাবে না। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আমাদের দিন যায়। ’
তবে পরিবহন খাতের এই নৈরাজ্যকে অর্থনীতির জন্যও হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের বিভিন্ন যানবাহন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার কম হবে না।
মন্তব্য করুন