ভিডিও

উদ্বোধনের ১৩ বছর পেরোলেও নিশ্চিত হয়নি চিকিৎসা সেবা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪, ১০:৫৮ রাত
আপডেট: সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪, ১০:৫৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদদাতা : নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫নং ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি উদ্বোধনের ১৩ বছর পরও নিশ্চিত হয়নি চিকিৎসা সেবা প্রদান কার্যক্রম। এটি উদ্বোধন করা হয় ২০১১ সালে।

কর্তৃপক্ষের দাবি, স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি অনুমোদন না হওয়ায় জনবল শূন্যের কারণে চালু করা যাচ্ছে না স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবা কার্যক্রম। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের ওই অঞ্চলের সাধারণ জনগণ অনেকদিন ধরে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এদিকে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ভবনটি। তাই এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করার।

জানা যায়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি উপজেলার ৫নং ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ফাগুয়য়াড়দিয়াড় বাজারে পোস্ট অফিস সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে অবস্থিত। উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দু’তলা বিশিষ্ট। ওই ইউনিয়নের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার ২৬৩ জন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে ভবনটি স্থাপিত হলেও নানা জটিলতার কারণে ২০১১ সালে এর উদ্বোধন হয়।

কিন্তু উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ওই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অনুমোদন না হওয়ায় চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ফলে কোটি টাকার ভবনটি কোনো কার্যক্রম ছাড়াই অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে দেখা যায় যে তাদের কার্যক্রম চলছে।


ওয়েবসাইটে লেখা আছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সপ্তাহে ৬দিন মা ও শিশুর সেবা প্রদান, সাধারণ চিকিৎসা, সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি ওষুধ প্রদান করা হয়ে থাকে। ইউনিয়নের যে সকল রোগী সেবা নিতে আসে তাদের রোগের সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়ে তাকে। গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা, মা ও বাচ্চার সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো কার্যক্রম নেই। ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতলা ভবনটির চারপাশ নোংরা, আবর্জনায় ও ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। ভবটির ছাদ ও দেওয়াল ভর্তি হয়ে আছে লতাপাতায়। ভবনটির প্রবেশদ্বারে লতাপাতা, বড় বড় ঘাসে ভরপুর। ভিতরে ময়লা আবর্জনা পড়ে স্তুপে পরিণত হয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন একটা পরিত্যক্ত ভবন।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর হতে আপাতত সপ্তাহে দুইদিন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা বলা হলেও বাস্তবে গিয়ে পাওয়া যায় উল্টো রুপ। এলাকার কিছু রোগী নির্ধারিত দিনে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সেবাদানকারী কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর উপস্থিতি না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।

জানা যায়, উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নের বাকি ৪টি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থাকলেও শুধু সদরেই রয়েছে একজন ডিগ্রিধারি ডাক্তার আর বাকি ৩টির চিকিৎসা সেবা চলে শুধু ফার্মাসিস্ট দিয়ে। আর ওই স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি জনবল শূন্য হওয়ায় তালাবদ্ধ থাকে অধিকাংশ সময়। তবে আপাতত সপ্তাহে ২ দিন অন্য ইউনিয়ন থেকে একজন ফার্মাসিস্ট এসে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন বলে জানা যায়।

ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এএসএম লেলিন জানান, এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধই থাকে বেশির ভাগ সময়। বন্ধ থাকার কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তার ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। বিভিন্ন সময় পরিষদের মিটিংএ চিকিৎসা সেবা চালু করার বিষয় উপস্থাপন করা হলেও কোনো কাজে আসেনি। কর্তৃপক্ষ সব সময় জনবল সংকটের কথাই জানিয়ে আসছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের মেডিকেল অফিসার ডা. নাইমা জাহান জানান, ওই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি সরকারিভাবে অনুমোদন না হওয়া এবং জনবল শূন্য হওয়ায় চালু করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া বাকি ৪টা ইউনিয়নেও পর্যাপ্ত জনবল নেই। তাই অন্য ইউনিয়ন থেকে লোক নিয়ে এসে চালানও কঠিন। তবে অন্য ইউনিয়ন হতে একজন ফার্মাসিস্ট এনে আপাতত সপ্তাহে দুইদিন চিকিৎসা সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শরীফ মো. জামিউর রহমান জানান, জনবল না থাকায় ওই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সপ্তাহে ২ দিন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। নতুন জনবল এর জন্য অধিদপ্তরে কিছুদিন আগে আবেদন করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS