স্টাফ রিপোর্টার ও শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : দক্ষিণ বগুড়ার ত্রাস ৩০ গ্রামের মানুষের আতংক সাগর বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগর তালুকদার (৩৩) ও তার সহযোগী স্বপন (২৮)কে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সাগরের বিরুদ্ধে ৪টি হত্যা, চাঁদাবাজি মাদকসহ ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে। সে শাজাহানপুর উপজেলার শাবরুল হাটখোলা পাড়ার গোলাম মোস্তফা তালুকদারের ছেলে ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের কর্মী। তার সহযোগী স্বপন একই এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে। এ সময় সাগরের অপর সহযোগী মুক্তার হোসেন (৩৬) গুরুতর আহত হয়েছে।
স্থানীয়রা দৈনিক করতোয়াকে জানিয়েছেন, আজ রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শাবরুল ছোট মন্ডল পাড়া এলাকায় একটি মুরগির খামারের সামনে একদল দুর্বৃত্ত রামদা ও চাপাতি দিয়ে উপর্যুপোরি কুপিয়ে সাগর তালুকদার ও তার সহযোগী স্বপনকে খুন করে চলে যায়।
স্থানীয়রা আরও জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত শাবরুল এলাকায় খুন খারাবি হয়ে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় কয়েক বছর আগে শাবরুল বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বাবু এবং প্রভাষক পারভেজ খুনের ঘটনাও ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সাগর হোসেন তালুকদার (৩৩) খুন, হত্যা, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, অস্ত্রবাজিসহ সব ধরনের অপরাধে জড়িয়ে, সাগর হয়ে উঠে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী সাবরুল বাজার এলাকার অপরাধ জগতের ‘ডন’।
পুলিশের হিসাবে, সাগর তালুকদার ৪টি হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজিসহ ১৫টির বেশি মামলার আসামি ছিল। নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে হেন কোনো অপকর্ম নেই, যা সে করেনি। স্থানীয় ২৫-৩০ তরুণ-যুবককে নিয়ে গড়ে তুলেছিল ‘সাগর বাহিনী’। প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে রীতিমতো ‘মূর্তিমান আতঙ্ক’ হয়ে ওঠেছিল এই বাহিনী।
সাগর আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এলাকায় তার কোন প্রতিদ্বন্দী রাখতে চায়নি। ‘এক বনে দুই সিংহ থাকতে পারেনা’ এই ব্রত নিয়ে সে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। স্বেচ্ছাসেবকলীগের একজন শীর্ষ নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছিল।
কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। কোনঠাসা হয়ে পড়ে সাগর বাহিনী। প্রতিপক্ষ এতোটাই শক্তিশালী হয়ে যায় যে সাগর ও তার বাহিনী পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এ অবস্থায় তাকে ও তার এক সহযাগীকে পেয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। তাকে এমনভাবে কোপানো হয় যে, লাশ টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
স্থানীয়রা আরও জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত শাবরুল এলাকায় খুনের ঘটনা ঘটে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় ৩ বছর আগে শাবরুল বাজারের মাছ ব্যবসায়ী স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন বাবু এবং ১ বছর আগে প্রভাষক পারভেজ খুনের ঘটনা ঘটে। এ দুটি খুনের ঘটনায় সন্ত্রাসী সাগর ও বাহিনী জড়িত ছিল।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শরাফত ইসলাম দৈনিক করতোয়াকে বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে এই জোড়া হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের সনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।