ভিডিও

‘৩০ টাকায় সালোয়ার-কামিজ’

প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৪, ০৮:০৩ রাত
আপডেট: মে ৩০, ২০২৪, ০৮:০৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বৈশ্বিক অবস্থার জন্য দেশে প্রতিটি নিত্য পণ্যের দাম প্রায় আকাশ ছোঁয়া। পরিধেয় বস্ত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। কাপড়ের দাম এবং মজুরি মিলিয়ে সেটাও এখন হাতের নাগালের বাইরে। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। নতুন কিনতে এবং বানাতে না পারেন তো কী হয়েছে তাদের জন্য মিলছে ৩০ টাকায় সালোয়ার কামিজ আর ৩০ টাকায় বিছানার চাদর। বগুড়ার নবাববাড়ী সড়কে সার্কিট হাউজের সামনে গত কয়েকদিন হলো এমন সস্তায় বিক্রি হচ্ছে পুরাতন কাপড়।

বগুড়াসহ দেশের অনেক উপজেলা-জেলা শহরেই গড়ে উঠেছে পুরাতন কাপড়ের দোকান। স্বচ্ছল জনগোষ্ঠীদের ফেলে দেয়া বা জামা-কাপড়ের বদলে হাড়িপাতিলের বিনিময়ে ফেরিওয়ালাদের সংগৃহীত বেশিরভাগ পুরাতন কাপড় চলে যায় ঢাকার বেগমগঞ্জ এলাকার বেচারাম দেউরিতে। ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কিনে নেয়া পোশাকের ব্যবহারযোগ্যতা, ছেঁড়া-ফাটার পরিমাপ ও ধরণ দেখে কাপড় আলাদা করা হয়। এরপর সেগুলো একত্রিত করে কম দামে খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি করেন বেচারাম দেউড়ির এই ব্যবসায়ীরা। এই ব্যবসার জন্য নামকরা সেন্টু-পিন্টু মার্কেট, জাহাঙ্গীর মার্কেট, হাফিজ মার্কেট ছাড়াও বেচারাম দেউড়ির রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠেছে পুরনো কাপড় বিক্রির কয়েকশ’ দোকান।
বগুড়ার হকার্স মার্কেটে পুরাতন শীতের পোশাক মিললেও গত কয়েকদিন হলো শহরের সাতমাথার আশেপাশে ফুটপাতের পাশে  চোখে পড়ার মত রঙিন কাপড়ের পসরা দেখে  অনেকেই আগ্রহী হয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান  সেগুলো আসলে ব্যবহার করা পুরাতন সালোয়ার কামিজ ও চাদর। দোকানীরা বলেই চলেছেন ‘যা কিনবেন তাই ৩০। ৩ পিস ১শ’।’ তাদের দাবি কাপড়গুলো নতুন তবে, গার্মেন্টস এর রিজেক্ট কাপড়। যারা অবশ্য কাপড় নেড়েচেড়ে দেখছেন তারা ঠিকই বুঝে যাচ্ছেন কারো ব্যবহার করা পুরাতন কাপড় কাপড় এগুলো।

নারায়ণগঞ্জ থেকে বস্তায় করে কাপড় এনে কয়েকদিন হলো বিক্রি করছেন মো. মাসুদ ও কবিরসহ আরও ২ জন। তারা জানান, এসব কাপড় তারা বেগম বাজারের পুরাতন কাপড়ের মার্কেট থেকে বেছে বেছে কিনে এনেছেন। লাভ, খরচ মিলিয়ে প্রতিটি সালোয়ারের পিস বিক্রি করছেন ৩০  টাকায়। খরচ বাদ দিয়ে তবুও এই বিক্রির টাকায় তাদের সংসার চলে। তারা আরও জানান, নিম্ন আয়ের মানুষ, মিস্ত্রী, শ্রমিক, রিকশাচালক থেকে শুরু করে অনেক সময় ভাল পরিবারের মানুষও এই কাপড়গুলোর ক্রেতা।

তেমনই একজন ইয়াসিন প্রামানিক। পেশায় রিকশাচালক। বললেন, ‘বাড়িতে বউ এবং দুই মেয়ে মিলে তিনজনের কাপড় কিনতে হয়। বছরের এমাথা এবং ও মাথায় কাপড় কিনে দেয়। ইচ্ছে থাকলেও সামর্থ হয়না। তাই এখান থেকে তিনটি জামা ও পায়জামা কিনলাম তাদের জন্য। খুব বেশি পুরাতন নয়। পড়তে পারবে অনেকদিন।’

নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের অতিমূল্যের বাজারে এমন সুলভমূল্যে কাপড় কিনতে পারা নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য এক চিলতে ভালবাসার মতই। তারা  দীর্ঘক্ষণ ধরে উল্টে-পাল্টে কিনছিলেন ‘সাধ্যের মধ্যে নিজের জরুরি প্রয়োজন’।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS