ভিডিও

প্রতিদিনকার মাছনূন দু’আ দরূদ

আলহাজ্ব হাফেজ মাও: মুহাম্মদ আজিজুল হক

প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২৪, ১০:৪৫ রাত
আপডেট: মে ৩১, ২০২৪, ১০:৪৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

আমাদের জীবনের প্রত্যেকটা পদে পদে আল্লাহকে স্মরণ করা উচিত। জীবনের প্রত্যেকটা পদে পদে যেন মনের মধ্যে আল্লাহর স্মরণ এসে যায়, এজন্য ইসলাম আমাদের একটি বিশেষ শিক্ষা দিয়েছেন। আমরা যদি সেই শিক্ষা অনুযায়ী কাজ করি,তাহলে সারাক্ষণ আমাদের মনে আল্লাহর স্মরণ উপস্থিত থাকবে এবং খুব সহজে আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক জুড়ে যাবে।

সে শিক্ষাটা হলো বিশেষ সময়ে বিশেষ দোয়া পাঠ করা। এই দোয়াগুলোর মধ্যে আল্লাহর কাছে সাহায্য,রহমত,বরকত ইত্যাদি আনুকূল্য কামনা করা হয়। দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় কতিপয় দোয়া নিচে উল্লেখ করা হলো। এ দোয়াগুলো মুখস্ত করে নিয়মিত পাঠ করা একান্ত কর্তব্য। দোয়াগুলো বুঝার সুবিধার্থে তরজমাও পেশ করা হলো।

(৩৫) যানবাহন ও সাওয়ারীতে উঠার দোয়া : প্রথমে বিস্মিল্লাহ বলে যানবাহনে ডান পা রাখবেন। তারপর পুরোপুরি উঠে বা আসনে বসে আলহামদুলিল্লাহ পড়বেন। তারপর নিম্নোক্ত দোয়া পড়া সুন্নাত। সুবহানাল্লাযী সাখখারা লানা হাযা ওয়া মা কুন্না লাহু মুক্বরিনীন ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনক্বালিবূন।

অর্থ: পবিত্র ওই আল্লাহ, যিনি একে আমাদের আয়ত্বাধীন করে দিয়েছেন, অথচ একে আমরা নিজেদের আয়ত্বাধীন করতে পারতাম না। আর নিশ্চয় আমরা আপন প্রভূর কাছে ফিরে যাব।

(৩৬) নৌকা, জাহাজ, পুল ইত্যাদিতে পড়ার দোয়া : বিসমিল্লাহি মাজরেহা ওয়া মুরছাহা ইন্না রাব্বি লাগফূরুর রহীম। অর্থ: আল্লাহর নামেই এর চলা ও থামা। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

(৩৭) দুশ্চিন্তা বা পেরেশানীতে পড়ার দোয়া : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওকীল। অর্থ: আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম তত্ত্বাবধায়ক।

(৩৮) শত্রুর দ্বারা ক্ষতির ভয় হলে : আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফী নুহুরিহিম ওয়া নাউযুবিকা মিন শরুরিহিম। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনাকে তাদের মোকাবিলায় দাঁড় করাচ্ছি এবং তাদের অনিষ্ট থেকে আপনার কাছে পানাহ চাচ্ছি।

(৩৯) শহরে প্রবেশকালে দোয়া : আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফীহা। অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদেরকে এ শহরে বরকত দান করুন।

(৪০) কোন পছন্দনীয় জিনিস দেখলে : আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী বিনি’মাহিতী তাতিম্মুস সালিহাতা। অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যার দানে যাবতীয় সৎকর্ম পূর্ণত্ব লাভ করে।

(৪১) খানা সামনে আসলে পড়তে হয় : আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফিমা রাজাকতানা ওয়াকিনা আজাবান্নার। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে যে রিযিক দান করেছেন তাতে আমাদেরকে বরকত দিন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন।

(৪২) খানা খাওয়ার পর পঠিত দোয়া : আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আত আমানা ওয়া সাকানা ওয়া জাআলানা মিনাল মিসলিমীন। অর্থ : সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে পানাহার করিয়েছেন এবং মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।

(৪৩) দাওয়াতের খাবার খেয়ে পড়তে হয় : আল্লাহুম্মা আতয়িম মান আত আমানী ওয়াসকি মান সাকানী। অর্থ : হে আল্লাহ! যে আমাকে পানাহার করিয়েছে আপনি তাকে পানাহার করান।

(৪৪) দস্তরখানা উঠানোর দোয়া : আলহামদুলিল্লাহি হামদান কাছিরান ত্বইয়িবান মুবারকান ফীহি গাইরা মাকফিয়্যান ওয়ালা মুআদ্দাইন ওয়ালা মুসতাগনান আনহু রব্বানা। অর্থ : আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা, এমন প্রশংসা যা অশেষ, পবিত্র ও বরকতময়। হে আমার প্রভু! এই খাবারকে অপ্রচুর মনে করে বা চিরদিনের জন্য বিদায় দিয়ে বা এর প্রতি বিমুখ হয়ে উঠলাম না।

(৪৫) পানি পান করার দোয়া : পানি পান করার শুরুতে ‘বিস্মিল্লাহ’ এবং শেষে এই দোয়া পড়তে হয়। আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী জাআলাহু আযাবান ফুরাতান ওয়া লাম এজ আলহু মিলহান উজাজা। অর্থ : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি এটাকে বানিয়েছেন সুমিষ্ট ও সুপেয় এবং এটাকে বানাননি লবণাক্ত ও বিস্বাদ।

(৪৬) দুধ, চা, কফি, মাঠা ইত্যাদি পান করার দোয়া : আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফীহি ওয়া যিদনা মিনহু। অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের জন্য এতে বরকত দিন এবং আমাদেরকে এটা আরো  বেশি করে দিন।

(৪৭) মেজবানের বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় পড়বেন : আল্লাহুম্মা বারিক লাহুম ফীমা রযাকতাহুম ওয়াগফির লাহুম ওয়ার হামহুম। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে যে রিযিক দান করেছেন তাতে বরকত দিন, তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তাদের উপর রহম করুন।

(৪৮) সফর থেকে প্রত্যাবর্তনের পর পড়তে হয় : আয়িবূনা তায়িবূনা লি রব্বিনা হামিদূন। অর্থ : আমরা সফর থেকে ফিরে এসেছি,তওবা করছি এবং ইবাদত ও গুণকীর্তন করছি স্বীয় প্রতিপালকের।

(৪৯) ঘরে প্রবেশের দোয়া : আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা খাইরাল মাওলিজি ওয়া খাইরাল মাখারাজি বিস্মিল্লাহি ওয়া লাজনা ওয়া বিস্মিল্লাহি খারাজনা ওয়া আলাল্লাহি রব্বানা তাওয়াককালনা। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি গৃহে প্রবেশ করতে এবং বের হতে আপনার কাছে মঙ্গল প্রার্থনা করি। আমি আল্লাহর নাম নিয়ে গৃহে প্রবেশ করি এবং আল্লাহর নাম নিয়ে গৃহ থেকে বের হই। আর আল্লাহর উপরই ভরসা করি।

(৫০) সন্ধ্যাকালের দোয়া : রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সন্ধ্যা বেলায় পাঠ করতেনঃ আল্লাহুম্মা বিকা আমসাইনা, ওয়া বিকা আসবাহনা,ওয়া বিকা নাহইয়া,ওয়া বিকা নামূতু, ওয়া ইলাইকান নুশূর। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার হুকুমে আমার সন্ধ্যা হয়েছে, আপনার হুকুমেই আমার সকাল হবে,আপনার হুকুমেই আমার জীবন ও মরণ। আর আপনার কাছেই আমি ফিরে যাবো।

(৫১) চাঁদ দেখার দোয়া : আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি রব্বি ওয়া রব্বুকাল্লাহ। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য এই চাঁদকে নিরাপত্তা ও ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে উদিত করুন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS