ভিডিও

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৪, ১১:০০ রাত
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৪, ১১:০০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সোমবার ঈদ। ঘরে ঘরে আনন্দ উৎসবের প্রস্তুতি। ঈদুল আজহার আবশ্যিক অঙ্গ কোরবানি।  মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর সেই উৎসব বছর ঘুরে আবার এসেছে আমাদের মধ্যে। সব ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বঙ্গনে সবার পাশে দাঁড়ানোর দিন ঈদুল আজহা। পবিত্র এই দিনটিতে আল্লাহর রাহে প্রিয় জিনিস হিসেবে পশু উৎসর্গ করা হয়।

কোরবানির ভেতর দিয়ে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে অগ্রসর হয় মুসলিম সম্প্রদায়। কোরবানির অর্থ হচ্ছে উৎসর্গ করা। পশু কোরবানি হচ্ছে তার মাধ্যম। যে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণ মূর্ত হয় মানুষের জীবনে, তার জন্য চরম ত্যাগ স্বীকারের এক প্রতীকী আচার এই কোরবানি। ঈদুল আজহার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিজের অহমিকা ও উচ্চাভিলাষ উৎসর্গ করা। পশু কোরবানির ভেতর দিয়ে মানুষের ভেতরের পশু শক্তি, কাম-ক্রোধ, লোভ, মোহ, পর নিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুকেই কোরবানি দিতে হয়।

এ ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে হজরত ইব্রাহিমের (আ) সময় থেকে। হজরত ইব্রাহিমের (আ) আনুগত্য পরীক্ষার জন্য মহান আল্লাহ তাকে তার প্রিয়তম বস্তু কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বপ্নে পাওয়া সে নির্দেশ পালন করতে গিয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ) নিজ পুত্র হজরত ইসমাইলে (আ) কোরবানি দিতে উদ্যত হন। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

হজরত ইসমাইলে (আ) বদলে কোরবানি হয় একটি দুম্বা। হজরত ইব্রাহিমের (আ) এই ত্যাগের আদর্শকে স্মরণ করার জন্য বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায় প্রতি বছর ঈদুল আজহায় হালাল পশু কোরবানি দিয়ে থাকে। শুধু কোরবানির ক্ষেত্রেই নয়, পবিত্র হজব্রতের নানা আচারের মধ্য দিয়ে তারা হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) স্মরণ করেন।

এসব আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মুসলমানরা জানিয়ে দেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে প্রস্তুত। তাই ঈদুল আজহা ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর একটি উৎসব। প্রতীকী ত্যাগের এই কোরবানির পশুর রক্ত, মাংস কিছুই আল্লাহর দরবারে পৌছায় না। বান্দার ভক্তি ও আনুগত্যই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।

কোরবানির ফজিলত অর্জন করতে হলে প্রয়োজন ওই  আবেগ, অনুভূতি, প্রেম, ভালোবাসা ও ঐকান্তিকতার, যে আবেগ অনুভূতি, প্রেম ভালোবাসায় ও ঐকান্তিকতা নিয়ে কোরবানি করেছিলেন আল্লাহর খলিল হজরত ইব্রাহিম (আ)। যদিও মহান আল্লাহর নির্দেশে সে কোরবানি প্রতীকীভাবে পশু কোরবানিতে পরিণত হয়। পশু কোরবানির মাধ্যমে কোরবানিদাতা কেবল পশুর গলায় ছুরি চালায় না, বরং সে যেন ছুরি চালায় সব কুপ্রবৃত্তির গলায়। ঈদুল আজহার প্রকৃত উদ্দেশ্য তাই স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসগ করা।

ধর্মীয় উৎসব মানেই এবাদত-বন্দেগী। পাশাপাশি বস্তুগত ভোগের কিছু আয়োজনও এসব অনুষ্ঠারে সঙ্গে যুক্ত থাকে। নতুন নতুন পোশাক আর মনোরম সুস্বাদু খাবারের আয়োজন করা হয় প্রত্যেক মুসলিম পরিবারে। ঈদ মানেই আনন্দ। গরিব-দু:খী সবার জন্যই এ আনন্দ সমান। ইসলাম ধনী-গরিবে বিভেদ করে না। পৃথিবীর সব মুসলমান একত্রিত হয়ে এ দিনটিতে নামাজ আদায় করবেন। ধনী-গরিবের ব্যবধান ভুলে একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গন করবেন। করবেন শুভেচ্ছা বিনিময়।

ইসলাম শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হলেও বাস্তবে আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলতে পারছি না। আমরা মনে করি, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে, ধনী-গরীবের ব্যবধান ঘোচাতে না পারলে সমাজে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ইসলামের আদর্শে আমাদের অনুপ্রাণিত হতে হবে।

বিত্তহীনদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে দেশের বিত্তবানদের। কারণ বিত্তবানদের অল্প সাহায্যেই একটি বিত্তহীন পরিবার আনন্দে হেসে উঠতে পারে। উপভোগ করতে পারে ঈদের আনন্দ। আমরা আশা করব ঈদুল আজহার মহান ত্যাগের মহিমায় দেশের সব মানুষ উজ্জীবিত হয়ে উঠবেন। বাংলাদেশের মুসলমান তথা পৃথিবীর মুসলমানদের জন্য ঈদুল আজহা বয়ে আনুক অপার আনন্দ আর উচ্ছ্বাস।

বিশ্বে নির্যাতিত সব মুসলমানদের ওপর মহান আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। দৈনিক করতোয়ার লেখক, পাঠক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ী সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা।

ঈদ মোবারক



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS